আরো যেসব তালিকায় সবার ওপরে সাকিব

মাঠের পারফরম্যান্সে ব্যাটে-বলে অনন্য সাকিবকে আটকানো কঠিন হলেও এক জায়গায় ঠিকই আটকে যাবেন তিনি। যদি সাকিবকে প্রশ্ন করা হয়, এবারের বিশ্বকাপের কোন ম্যাচের পারফরম্যান্সকে সবচেয়ে এগিয়ে রাখবেন? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নিশ্চিত আটকে যাবেন তিনি।
তবে সব ক্ষেত্রে সমান অবদান রেখেই যে সাকিব ক্ষান্ত হচ্ছেন, তা নয়। আরো বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেরাদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সাকিব আল হাসানের নাম।
এবারের বিশ্বকাপে মোট ছয় ইনিংসে ৪৭৬ রান করে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রাহকদের তালিকায় রয়েছেন সবার ওপরে। শুধু কী তাই? সেরা বোলিং ফিগারের তালিকায়ও সবার ওপরে সাকিবের নাম। গতকাল সোমবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০ ওভারে মাত্র ২৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থান দখল করেছেন সাকিব। এর আগে ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়ে শীর্ষে ছিলেন মোহাম্মদ আমির।
এদিকে, সবচেয়ে বেশি শতক হাঁকানো ক্রিকেটারদের তালিকায় যে কজনের দুটি করে শতক রয়েছে, তাঁদের মধ্যেও আছেন সাকিব। শুধু শতকই নয়, সবচেয়ে বেশি অর্ধশতকের তালিকায়ও সাকিবের নাম সবার ওপরেই রয়েছে। মোট তিনটি অর্ধশতক সাকিবের।
এসবেই থামছেন না তিনি। এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি চার হাঁকিয়ে সে তালিকায়ও সবার ওপরে সাকিবের নাম। টুর্নামেন্টে মোট ৪৮টি চার হাঁকিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। এখন পর্যন্ত মোট তিনবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন সাকিব আল হাসান। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারও তিনবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন। এ তালিকায় দুজনই রয়েছেন শীর্ষে।
এদিকে বিশ্বকাপে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক হাজার রান ও ৩২ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন সাকিব আল হাসান। আর বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এক ম্যাচে অর্ধশতক ও পাঁচ উইকেট নেন তিনি। এর আগে ভারতীয় ক্রিকেটার যুবরাজ সিং এই কীর্তি গড়েছিলেন।
অন্যদিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচে সাকিবের বোলিং পারফরম্যান্স ছিল তাঁর ক্যারিয়ার-সেরা ওয়ানডে বোলিং। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই অবদান রেখেছেন সাকিব। তাহলে ওয়ান ম্যান শো হয়ে যাচ্ছে কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমি মোটেও মনে করি না ওয়ান ম্যান শো হচ্ছে। সবাই নিজেদের জায়গা থেকে অবদান রাখছেন বলেই এই সাফল্য আসছে। হ্যাঁ, আমার পারফরম্যান্স হয়তো একটু বেশি ভালো যাচ্ছে, কিন্তু অন্যদের অবদানগুলোও খুব দরকার হয় ম্যাচ জেততে।’
এই দারুণ সাফল্যের রহস্য কী—এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে অনেক পরিশ্রম করেছি বলেই এ সাফল্য পাচ্ছি। ওই সময়টায় আমি ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করেছি।’
সাকিবের এমন সব অর্জনে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। নতুন নতুন মাইলফলক ছোঁয়া যেন সাকিবের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। এই অভ্যাসের বশে সাকিব যেন বাংলাদেশের ক্রিকেটকেও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন অনন্য উচ্চতায়।