বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের সাফল্য ব্যর্থতা

Looks like you've blocked notifications!

২০১৮ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশকে হারিয়েছিল আফগানিস্তান। তারপর পাকিস্তানকেও প্রায় কাঁদিয়ে ছেড়েছিল, আর ভারতের সঙ্গে টাই করেছিল। স্বাভাবিকভাবেই অনেকে ভেবেছিলেন যে এই বিশ্বকাপে সাড়া জাগানোর মতো কিছু করবে আফগানিস্তান।

কিন্তু আফগানিস্তানের প্রধান অস্ত্র স্পিন, ইংল্যান্ডের পরিবেশ যে আপাদমস্তক আলাদা! মানিয়ে নিতে নিতেই বিশ্বকাপ শেষ। নটা ম্যাচের একটাও না জিতে এবারের বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করল আফগানিস্তান।

শ্রীলঙ্কার মতোই বিশ্বকাপের আগে দলের খোলনলচে বদলে ফেলেছিল আফগানিস্তান। আসগর আফগানকে বরখাস্ত করে প্রতি ফরম্যাটের জন্য আলাদা অধিনায়ক নিযুক্ত করে বোর্ড। নতুন অধিনায়ক গুলবদিন নঈব না খেললেন ভালো, আর না দিতে পারলেন সামনে থেকে দাপটের সঙ্গে নেতৃত্ব। পাকিস্তান ম্যাচে নঈবের অধিনায়কত্বের কমতি রীতিমত চোখে লেগেছিল। শেষ মুহূর্তে কয়েকটা ভুল সিদ্ধান্তের জন্য জেতা ম্যাচ হারে আফগানিস্তান। নঈব ছাড়াও ব্যর্থ হন আসগর আফগান ও রাশিদ খানের মতো সিনিয়ররা।

বিশ্বকাপের আগে আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দারুণ খেলেছিলেন মোহাম্মদ নবী। এই বিশ্বকাপেও সেই ফর্ম খানিকটা ধরে রাখতে পেরেছেন তিনি। ৩০ রানে চার উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ধস নামান তিনি। আফগানিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেটও নবীই পেয়েছেন; সেই নবীই আবার ফিফটি করে ভারতকে প্রায় হারিয়েও দিয়েছিলেন। 

ভারত, পাকিস্তান দুই দলের বিপক্ষেই ভালো খেলেছে আফগানিস্তান। স্পিনাররা দারুণ বল করে ভারতকে ২২৪ রানে আটকে রাখলেও বুমরাহ-বাহিনীর সামনে হার মানে আফগান ব্যাটসম্যানরা।

আর পাকিস্তানের বিপক্ষে তো তারা নিজেদের দোষে হেরেছে। তবে বাঁচা-মরার ম্যাচ বলে খানিকটা বাড়তি উদ্যম নিয়েই সেদিন ঝাঁপিয়েছিল পাকিস্তান। ম্যাচ একদম শেষ পর্যায় অবধি টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য কৃতিত্ব অবশ্যই প্রাপ্য আফগানদের।

গোটা বিশ্বকাপজুড়ে যেখানে পেস বোলারদের রমরমা, সেখানে আফগান সিমাররা উইকেট পেয়েছেন মাত্র ২৩টা। স্পিনাররা সেখানে নিয়েছেন ২৪ উইকেট। বাজে ফীল্ডিংও বারবার ডুবিয়েছে আফগানিস্তানকে। বাংলাদেশ ম্যাচের পর নঈব সর্বসমক্ষে সমালোচনা করেন ফিল্ডরদের।

তবে এবারের বিশ্বকাপ মাতিয়ে দিয়েছেন ১৮ বছরের মুজিব উর রহমান। বলের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছিল চোখে পড়ার মতো। ওভারপিছু মাত্র ৪.৪৭ রান দেন তিনি। রোহিত শর্মাকে তিনি যে বলটায় আউট করেন সেটা নিশ্চিতভাবে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা।

 

বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের ফলাফল :

১ জুন : আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া, ব্রিস্টল কাউন্টি গ্রাউন্ড, অস্ট্রেলিয়া জেতে সাত উইকেটে

৪ জুন : আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা, কার্ডিফ ওয়েলস স্টেডিয়াম, শ্রীলঙ্কা জেতে ৩৪ রানে (ডিএলএস পদ্ধতিতে)

৮ জুন : আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ড, টনটন কাউন্টি গ্রাউন্ড,  নিউজিল্যান্ড জেতে সাত উইকেটে

১৫ জুন : আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা, কার্ডিফ ওয়েলস স্টেডিয়াম,  দক্ষিণ আফ্রিকা জেতে নয় উইকেটে

১৮ জুন : আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ড, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড, ম্যাঞ্চেস্টর , ইংল্যান্ড জেতে ১৫০ রানে

২২ জুন : আফগানিস্তান ও ভারত, হ্যাম্পশায়ার, সাউথাম্পটন , ভারত জেতে ১১ রানে

২৪ জুন : বনাম বাংলাদেশ, হ্যাম্পশায়ার, সাউথাম্পটন , বাংলাদেশ জেতে ৬২ রানে

২৯ জুন : আফগানিস্তান ও পাকিস্তান, হেডিংলি, লিডস,  পাকিস্তান জেতে তিন উইকেটে

৪ জুলাই : আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ, হেডিংলি, লিডস , ওয়েস্ট ইন্ডিজ জেতে ২৩ রানে