বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব পেয়ে রোমাঞ্চিত ডমিঙ্গো
বলতে গেলে হিসেবের বাইরেই ছিলেন তিনি। বলা হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদ্য নিয়োগ পাওয়া কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কথা। এন্ডি ফ্লাওয়ার, মাইক হেসন, পল ফারব্রেস ও গ্রান্ট ফ্লাওয়ারের মতো বড় বড় তারকা ছিলেন তালিকায়। সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেরও ফেরার সম্ভাবনা ছিল। এমনকি শেষ মুহূর্তে তালিকায় যুক্ত হয়েছিলেন পাকিস্তানের সদ্য বিদায়ী কোচ মিকি আর্থারও।
বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ সবার থেকে ডমিঙ্গোকে আলাদা করে দিয়েছে। তিনিই একমাত্র প্রার্থী ঢাকায় এসে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এবং বিসিবিকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছেন। অবশ্য এর আগে বিসিবির দৃষ্টি ছিল হেসন ও হাথুরুসিংহের প্রতি। তবে সবাইকে পেছনে ফেলে ডমিঙ্গোই দায়িত্ব পান মাশরাফি-সাকিবদের।
দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দল ছাড়াও বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন ডমিঙ্গো। জাতীয় দল নিয়ে কাজ করলেও জুনিয়রদের প্রতি তাঁর আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক। এটিই তাঁকে অন্য প্রার্থীদের চেয়ে এগিয়ে রেখেছিল।
বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্ব পেয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত ডমিঙ্গো। ক্রিকেটের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ দল নিয়ে বেশ আশাবাদের কথা শুনিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের সাবেক এই কোচ।
শুরুতেই ডমিঙ্গো গুরুত্ব দেবেন তরুণ ক্রিকেটারদের প্রতি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে শুরু করে জাতীয় দল নিয়েও আমি কাজ করেছি। অবশ্যই অগ্রাধিকার হবে জাতীয় দল, তবে নিচের পর্যায়ে কী হচ্ছে সে বিষয়ে আপনার আগ্রহ থাকতে হবে। মূলত এখান থেকেই খেলোয়াড় আসছে। তা নিয়ে কাজ করতে পারলে ভবিষ্যতে জাতীয় দল উপকৃত হবে।’
তরুণদের কেন সুযোগ দিতে চান এ সম্পর্কে সাবেক প্রোটিয়া কোচ বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রতিভার ছড়াছড়ি। নতুন খেলোয়াড় তুলে এনে সিনিয়রদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। তরুণ খেলোয়াড় খুঁজে বের করতে হলে হাই পারফরমেন্স কোচের সঙ্গে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল চারবার ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছে। নিচের পর্যায়ে অবশ্যই কিছু মেধাবি খেলোয়াড় আছে, যাদের জাতীয় দলের কাছাকাছি রাখা প্রয়োজন।’
সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলের কোচ হিসেবে আমার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কোচ ছিলাম আমি। সেবার সেমিফাইনাল থেকে আমরা বিদায় নিয়েছিলাম। সেই পরাজয় থেকে বেরিয়ে আসতে আমাদের অনেক সময় লেগেছিল। তবে গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের খেলা দেখে আমি অভিভূত। কয়েকটি ম্যাচে তারা জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েছিল। নিউজিল্যান্ড ম্যাচের কথা ভাবুন, একটা রানআউট মিস না হলে বাংলাদেশ দল সেমিফাইনালে খেলতে পারত।’
বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে ডমিঙ্গোর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হবে আগামী মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট। ৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে মুখোমুখি তারা।
তবে বাংলাদেশ দল নিয়ে আশাবাদী ডমিঙ্গো বলেন, ‘গত পাঁচ-ছয় বছরে দারুণ উন্নতি করেছে বাংলাদেশ দল। বোর্ডের সঙ্গে দেখা করে বুঝতে পেরেছি তাদের চেষ্টা আছে। তা ছাড়া উঠে আসছে তরুণ ক্রিকেটারও। তাই পরাশক্তি দল হয়ে উঠতে ঠিক ভাবেই এগুচ্ছে তারা। এ কারণেই বাংলাদেশ দল নিয়ে আমি খুবই রোমাঞ্চিত।’