ঢাকার মাঠে কাদিরের ‘আপেল বোলিং’ আজও স্মরণীয়

Looks like you've blocked notifications!

গতকাল শুক্রবার রাতে মারা গেছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি স্পিনার আবদুল কাদির। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। কিংবদন্তি এই স্পিনারের মৃত্যুতে কার্যত ক্রিকেটের এক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল।

ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিনার হিসেবে বলা হয় তাঁকে। কিংবদন্তি এই লেগ স্পিনার একটা বলকে দশরকমভাবে স্পিন করাতে পারতেন।

লেগ স্পিন হচ্ছে ক্রিকেটের দূর্লভ শিল্প। লেগ স্পিনারদের পারফরম্যান্স বিবেচনায় সর্বকালের সেরা বলা হয় শেন ওয়ার্নকে। তবে সফলতার দিক থেকে অনিল কুম্বলে, রিচি বেনো, বিল ও'রেইলি, ভগবৎ চন্দ্রশেখর, স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল, দানিশ কানেরিয়া, মুশতাক আহমেদ, সুভাষ গুপ্তের নাম বলতে হবে। তবে লেগ স্পিনকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন আবদুল কাদির। রিস্ট স্পিন, গুগলি, ফ্লিপার এ মাস্টার ক্লাস ছিলেন এই গ্রেট। ক্রিকেটে লেগ স্পিন কতটা কার্যকরী হতে পারে ওয়ার্ন ও কুম্বলে তাঁর সফল প্রয়োগ ঘটালেও, কাদিরই প্রথম রিয়াল ম্যাচ উ্ইনার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।

১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে (তখনকার ঢাকা স্টেডিয়াম) আপেল দিয়ে বল করে যে টার্ন করিয়েছিলেন তিনি, তা ছিল অবিশ্বাস্য। একটি প্রর্দশনী ম্যাচ হচ্ছিল, পাকিস্তানের ইমরান খান একাদশ ও ভারতের মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন একাদশ মুখোমুখি হয়েছিল। কাদির পকেটে করে একটা আপেল নিয়ে মাঠে ডুকেছিলেন। আজহারউদ্দিন ব্যাট করছিলেন, কাদির হঠাৎ করে বলের বদলে আপেল দিয়ে বল করে সবাইকে বিস্মিত করেন। সে সময়ে তা বেশি আলোচিত হয়েছিল।

১৯৭৭ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল কাদিরের। এরপর একনাগাড়ে ৬৭ টেস্ট খেলেছেন তিনি। টেস্টে তিনি উইকেট নিয়েছেন ২৩৬টি। তবে তাঁক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ১৯৮৭ সালে। সেবার ইংল্যান্ডের এক ইনিংসে ৬৫ রান দিয়ে ৯ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন কাদির।

কাদিরের সেই রেকর্ড আজ অবধি কোনো পাক বোলার ভাঙতে পারেননি। মোট ১০৪টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এই স্পিনার। আর একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ১৩২ উইকেট। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে কাদির একাই ইংল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করেছিলেন।

কাদিরের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে ক্রীড়াঙ্গনে। ওয়াসিম আক্রাম, মঈন খান, রশিদ লতিফ, ওয়াকার ইউনিসের মতো পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা কাদিরের মৃত্যুতে গভীর শোকা প্রকাশ করেন।

ওয়াসিম আকরাম বলছেন, ‘আমরা একজন সেরা মানুষকে হারালাম, যিনি নিজেই একজন প্রতিষ্ঠান!’