ছন্দে ফেরার মিশনে সন্ধ্যায় মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বিশ্বকাপে প্রতিবেশী ভারতের কাছে হারের পর ব্যর্থতার একটা চক্রে আটকে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপ শেষে বাংলাদেশ গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা সফরে। সেখানেও পেতে হয়েছে পরাজয়ের স্বাদ। সম্প্রতি ঘরের মাঠে হেরেছে টেস্ট ক্রিকেটের নবীন দল আফগানিস্তানের কাছে। সব মিলিয়ে খুব ভালো পরিস্থিতিতে নেই সাকিব-মুশফিকরা।
এত সব ব্যর্থতার গল্প মাথায় নিয়েই আজ শুক্রবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায়।
দলের বর্তমান যা অবস্থা, তাতে একটা জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে আছে টাইগার শিবির। তাই সব ব্যর্থতার শৃঙ্খল ভেঙে সংক্ষিপ্ত এ ফরম্যাট দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ। দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, ‘যখন সাদা বলের খেলা আসে, বাংলাদেশ তাদের দিনে যেকোনো দলকে হারাতে পারে। আমাদের দলে কিছু বিশ্বমানের পারফর্মার রয়েছে। দলের খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতার দিকে তাকান। ৫০ ওভারের ম্যাচের বিশ্বকাপে, বাংলাদেশ দ্বিতীয় অভিজ্ঞতম দল ছিল। এ দলে দক্ষতার কোনো ঘাটতি নেই। আমার মনে হয় আমরা যদি আমাদের সেরাটা খেলতে পারি, তাহলে আমাদের হারানো খুব কঠিন হয়ে যাবে।’
অবশ্য ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা, সেটাও মনে করিয়ে দিলেন ডমিঙ্গো। বললেন, ‘আমরা প্রতিটি ম্যাচই জয়ের জন্য খেলব। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নির্দিষ্ট দিনে কোনো দল যেকোনো দলকে হারাতে পারে। আমি কালকের ম্যাচের কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারব না। কিন্তু আমি নিশ্চিত করে এটা বলতে পারি, ছেলেরা তাদের সেরা খেলাটিই খেলবে।’
নিজেদের খুব একটা পিছিয়ে রাখছেন না জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজাও। মূল লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই দুটি দলই (বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান) বেশ শক্তিশালী। আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত। ঘরের মাঠে বাংলাদেশও ভালো দল। সেদিক দিয়ে দুই দলই এগিয়ে। কিন্তু আমার মনে হয়, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমাদের সাফল্যও কম নয়। আমরাও এই ফরম্যাটে ভালো। তাই মনে হয় না আমরা এই সিরিজে পিছিয়ে থেকে শুরু করব।’
ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত আফগানরা। অনেকদিন খেলার মধ্যে না থাকা জিম্বাবুয়েকেও পিছিয়ে রাখার উপায় নেই। বাংলাদেশের এই ফরম্যাটে দুর্বলতা থাকলেও ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষের জন্য স্বাগতিকরা কঠিন প্রতিপক্ষ। সব মিলিয়ে একটা প্রতিযোগিতাপূর্ণ সিরিজ আশা করতেই পারে ক্রিকেট ভক্তরা।
টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে জিম্বাবুয়ে আছে ১৪ নম্বরে। আফগানিস্তানের অবস্থান সাতে। আর বাংলাদেশ আছে ১০ নম্বরে।
ঘরের মাঠে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বাদে টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ কমই পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি এবং ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছিল। এ ছাড়া সব মিলিয়ে খেলেছে মোট ১২টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। তবে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই সর্বোচ্চ চারটি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা ।
সিরিজের প্রথম তিনটি ম্যাচ ঢাকায়, বাকি তিন ম্যাচ খেলা হবে চট্টগ্রামে। প্রত্যেক দল পরস্পরের সঙ্গে দুটি করে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে। সেরা দুটি দল খেলবে ফাইনাল। ২৪ সেপ্টেম্বরের ফাইনালটি হবে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে।
দুই দলের স্কোয়াড
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাব্বির রহমান, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান ও ইয়াসিন আরাফাত মিশু।
জিম্বাবুয়ে দল : হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), রেজিস চাকাবা, রিচমন্ড মুতুম্বামি, শন উইলিয়ামস, নেভিল মাদজিভা, তিনোতেন্দা, মুতোম্বোদজি, টনি মুনিয়োঙ্গা, কাইল জারভিস, টেন্ডাই চাতারা, ক্রিস্টোফার এমপোফু, ক্রেইগ অরভিন, ব্রেন্ডন টেইলর, এইনসলে এন্দলোভু, টিমাইসেন মারুমা ও রায়ান বার্ল।