বাংলাদেশকে হেসে-খেলে হারাল আফগানিস্তান

Looks like you've blocked notifications!

আবারো ব্যাট হাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। টপ অর্ডারদের দায়িত্বহীনতা, সঙ্গে তরুণ ব্যাটসম্যানদের বাজে পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ২৫ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তান। এই জয়ের সুবাদে সিরিজের ফাইনালে খেলা অনেকটাই এগিয়ে রাখল রশিদ খানের দল।

আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ছয় উইকেটে ১৬৪ রান করে আফগানিস্তান। জবাবে ১৩৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

আফগানিস্তানের দেওয়া ১৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগে বিদায় নেন লিটন কুমার দাস। টিকতে পারেননি পজিশন পাল্টে ওপেনিংয়ে নামা মুশফিকুর রহিমও। দ্বিতীয় ওভারে ৫ রানে বিদায় নেন তিনি। আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও ব্যর্থ সাকিব আল হাসান। ১৩ বল মোকাবিলা করে ১৫ রানে বিদায় নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

দ্রুত চার উইকেট হারানোর পর সাব্বির রহমান ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের সপ্রতিরোধ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দারুণ এক স্লোয়ারে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙেন গুলবাদিন নায়েব। ফেরার আগে ৫ বাউন্ডারিতে ৩৯ বলে ৪৪ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।

মাহমুদউল্লাহর পর ফিরে গেলেন সাব্বির রহমানও। ডানহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান মুজিব উর রহমান।  ফেরার আগে সাব্বিরের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান।

সপ্তম উইকেটে মোসাদ্দেক-আফিফ জুটিও আজ বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারেনি। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত আফিফ এই ম্যাচে করেন ১৪ বলে ১৬ রান। একে একে মূল ব্যাটসম্যানদের হারিয়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১৩৯ রানে গিয়ে থামে সাকিব আল হাসানের দল।

আফগানিস্তানের পক্ষে বল হাতে চার ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মুজিবুর রহমান। ২৭ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন নায়েব।

এরআগে মোহাম্মদ নবির একার লড়াইয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ উইকেটে ১৬৪ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে টস জিতে বাংলাদেশকে বোলিংয়ের আমন্ত্রণ জানান অতিথি অধিনায়ক। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আফগান ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরেন বাংলাদেশি বোলাররা। প্রথম বলে ওপেনার রহমতউল্লাহকে ফিরিয়ে দেন সাইফউদ্দিন। দুর্দান্ত এক বলে সরাসরি বোল্ড করে ছন্দে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠান সাইফউদ্দিন।

দ্বিতীয় ওভারে আবারো উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এবার আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। আরেক আফগান ওপেনার হজরতউল্লাহ্ জাজাইকে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক। ফেরার আগে স্কোরবোর্ডে মাত্র ১ রান যোগ করেন জাজাই। নিজের কোটার দ্বিতীয় ওভার বল করতে এসে আবারো সাইফউদ্দিন ম্যাজিক। এবারের শিকার নাজিব। ষষ্ঠ  ওভারে নাজিবউল্লাহ্কে ফিরিয়ে দেন সাকিব।

৪০ রানে চার উইকেট হারানোর পর আসগর আফগান ও মোহাম্মদ নবির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানিস্তান। পঞ্চম উইকেটে এই জুটি থেকে আসে ৭৯ রান। ১৭তম ওভারে আসগরকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সাইফউদ্দিন। ফেরার আগে ৩৯ রান করেন তিনি। একই ওভারে একই ওভারে গুলবাদিন নায়েবকেও ফিরিয়ে দেন সাইফউদ্দিন।

কিন্তু বাকিদের থামাতে পারলেও মোহাম্মদ নবিকে থামাতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে একাই ঝড় তোলেন এই অলরাউন্ডার। তাতে নির্ধারিত ওভারে ছয় উইকেটে ১৬৪ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। ইনিংস শেষে ৮৪ রানে অপরাজিত থাকেন নবি। মাত্র ৫৪ বলের ইনিংসটিতে ছিল সাতটি ছক্কা ও তিনটি বাউন্ডারি।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৩৩ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। ১৮ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।