ফেরার ম্যাচে পাকিস্তানের জয়োৎসব
বৃষ্টির কারণে প্রথম ওয়ানডে মাঠে গড়ায়নি। তবে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আর বাধা হয়নি বৃষ্টি। তাতে দীর্ঘদিন পর পাকিস্তানের ঘরের মাঠে ফিরেছে ওয়ানডে ক্রিকেট। ফেরার ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে করাচিতে বিজয় উৎসব করেছে সরফরাজ আহমেদের দল।
গতকাল সোমবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাবর আজমের সেঞ্চুরি ও উসমান শিনওয়ারির ৫ উইকেটে শ্রীলঙ্কাকে ৬৭ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। আগামীকাল বুধবার একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুদল।
করাচি জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ৩০৫ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে সেঞ্চুরি তুলে নেন বাবর আজম। ৯৭ বলে ক্যারিয়ারের একাদশ সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি। তবে সেঞ্চুরির পর বেশিদূর যেতে পারেননি। ১০৫ বলে চার ছক্কা ও আট চারে ১১৫ রান করে সাজঘরে ফিরে যান এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। বাবর ছাড়াও হাফসেঞ্চুরি করেন ফখর জামান। ৬৫ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। ৪৮ বলে ৪০ রান করেন হারিস সোহলে। আর শেষের দিকে ২০ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারে অপরাজিত ৩২ রানের ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে বড় সংগ্রহ এনে দেন ইফতেখার আহমেদ।
৩০৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে উসমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪৬.৫ ওভারে ২৩৮ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। তবে দল হারলেও শিহান জয়সুরিয়া ও দাসুন শানাকার লড়াইকে মনে রাখবে ক্রিকেটবিশ্ব। ২৮ রানে ৫ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কার চরম বিপদে হাল ধরেন তাঁরা। গড়েন ষষ্ঠ উইকেটে ১৭৭ রানের রেকর্ড জুটি। এর আগেরটা ছিল ২০০৮ সালে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চামারা কাপুগেদারা ও চামারা সিলভার ১৫৯ রানের জুটি। কিন্তু জয়সুরিয়া-শানাকার লড়াইয়ের পরও জিততে পারেনি অতিথিরা। নির্ধারিত ওভারের আগেই ২৩৮ রানে থামে লঙ্কানরা। ১০৯ বলে ৯৬ রান করেন জয়সুরিয়া । ৮০ বলে ৬৮ রান করেন শানাকা।
৫১ রানে ৫ উইকেট নেন উসমান। সমান একটি করে উইকেট নেন আমির ও ওয়াহাব রিয়াজ।
২০০৯ সালে পকিস্তানের লাহোরে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের কাছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলকে বহনকারী বাসকে কিছু বন্দুকধারী আক্রমণ করে। সেই সন্ত্রাসী হামলার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রায় নিষিদ্ধ ছিল পাকিস্তানের হোম ভেন্যু।
দীর্ঘ বিরতির পর ২০১৫ সালে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের মাধ্যমে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে সাহায্য করে জিম্বাবুয়ে। আয়োজন করা হয় বিশ্ব একাদশের ম্যাচসহ পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। সেই ধারাবাহিকতায় এবার লঙ্কানরাও গেছে পাকিস্তান সফরে।
যদিও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় শ্রীলঙ্কার সফর পাকিস্তান সফরে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তবে সরকারি পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট পাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে পারল শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)। পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই পাকিস্তান সফরে যায় লঙ্কানরা।