লড়ে যাবেন ব্ল্যাটার-প্লাতিনি
অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ফুটবলসংশ্লিষ্ট যাবতীয় কর্মকাণ্ড থেকে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে ফিফা ও উয়েফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার ও মিশেল প্লাতিনিকে। ফলে তিক্ততার মধ্য দিয়েই শেষ হলো ফিফার ব্ল্যাটার অধ্যায়। আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার প্লাতিনি। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে প্লাতিনি আর অংশ নিতে পারবেন না ফিফার সভাপতি নির্বাচনে। তবে এ সিদ্ধান্ত এত সহজে মেনেও নিচ্ছেন না ফুটবল অঙ্গনের শীর্ষ দুই কর্মকর্তা। দুজনেই নিতে যাচ্ছেন পাল্টা আইনি পদক্ষেপ।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্ল্যাটার ও প্লাতিনি ২০ লাখ ডলারের অনৈতিক লেনদেন করেছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন সুইজারল্যান্ডের আইনজীবীরা। ব্ল্যাটার দাবি করেছিলেন, ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত প্লাতিনি ফিফার হয়ে যে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তারই পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল এই ২০ লাখ ডলার। তবে এতদিন পর কেন এই অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি ব্ল্যাটার বা প্লাতিনির কাছ থেকে। শেষ পর্যন্ত এই আর্থিক লেনদেন অনৈতিক বলেই ঘোষণা করেছে ফিফার নৈতিকতা-সংক্রান্ত কমিটি। আর শাস্তিস্বরূপ আট বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্ল্যাটার-প্লাতিনির ওপর। এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে এখন ফিফার আপিল বিভাগে আবেদন করবেন ব্ল্যাটার। সেখানেও সন্তুষ্ট হতে না পারলে যাবেন ক্রীড়াবিষয়ক বিশেষ আদালতে। তাঁর আইনজীবী বলেছেন, ‘নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য সভাপতি ব্ল্যাটার এখন সম্ভাব্য সব ধরনের আইনি পদক্ষেপের কথা চিন্তা করছেন।’
ফিফার এ সিদ্ধান্তকে অন্যায্য দাবি করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্লাতিনিও। তিনিও সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেবেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য। ২০১১ সালে যে ব্যাপারটির নিষ্পত্তি হয়ে গেছে, সেটা নিয়ে ২০১৫ সালে এসে অভিযোগ-তদন্ত শুরু হলো কেন—এমন প্রশ্নও তুলেছেন প্লাতিনি। তিনি বলেছেন, ‘২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ফিফার নৈতিকতাবিষয়ক কমিটি কী করছিল? তারা কি ঘুমাচ্ছিল? আর এখন হঠাৎ করেই জেগে উঠেছে? হ্যাঁ, এটা জেগে উঠেছে ফিফার সভাপতি নির্বাচনের বছর। যখন আমি নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছি। এটা খুবই অবাক করার মতো ব্যাপার। আমি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে যাব, এক আদালত থেকে আরেক আদালতে।’
গত মে মাস থেকেই দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত হয়েছে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। সে সময় সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার কংগ্রেসের ঠিক আগ দিয়ে একটি হোটেল থেকে শীর্ষস্থানীয় সাত কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছিল সুইস পুলিশ। পঞ্চমবারের মতো ফিফা সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরও সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন ৭৯ বছর বয়সী ব্ল্যাটার।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নতুন করে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ফিফার সভাপতি নির্বাচন। সেখানে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল প্লাতিনির। কিন্তু আট বছরের নিষেধাজ্ঞার পর আর সেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না ফ্রান্সের এই কিংবদন্তি ফুটবলার।
১৯৯৮ সাল থেকে ফিফার সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন ব্ল্যাটার। আর প্লাতিনি ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফার সভাপতি হিসেবে কাজ করছিলেন ২০০৭ সাল থেকে।