আজই কি ভোলা যাবে সেই দুই রানের দুঃখ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/03/02/photo-1456902494.jpg)
২০১২ সালের এশিয়া কাপে ক্রিকেটবিশ্বকে চমকে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এশিয়ার দুই ক্রিকেট পরাশক্তি ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো উঠেছিল ফাইনালে। কিন্তু দারুণ এই সাফল্যের পরও ২০১২ সালের এশিয়া কাপ বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এক অনন্ত আক্ষেপের নাম। ফাইনালে সবাইকে কাঁদিয়ে, নিজেরা কেঁদে মাত্র দুই রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল সাকিব-মুশফিকদের। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই দুই রানের দুঃখ এখনো বেদনা জাগায় বাংলাদেশের সমর্থকদের মনে। তবে এশিয়া কাপে সেই পাকিস্তানকেই হারাতে পারলে কিছুটা ধূসর হতে পারে সেই দুঃসহ স্মৃতি।
সেই সুযোগ দারুণভাবে, দারুণ সময়ে এসেছে বাংলাদেশের কাছে। এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচটা এমন সময়ে মাঠে গড়াচ্ছে, যখন জিততে পারলেই ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। হেরে গেলেও কাগজে-কলমে সুযোগ থাকবে। কিন্তু বসতে হবে অনেক জটিল হিসাব-নিকাশের খাতা খুলে। সেসব জটিলতার মধ্যে না গিয়ে মাশরাফিরা যদি সত্যিই পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট ছিনিয়ে নিতে পারেন, তাহলে সত্যিই রচিত হবে নতুন যুগের আরেকটি সাফল্যগাথা। ২০১২ সালের সেই আক্ষেপভরা ফাইনালের পর বাংলাদেশও আবার খেলতে পারবে শিরোপা জয়ের চূড়ান্ত লড়াইয়ে।
২০১২ সালের এশিয়া কাপ অবশ্য হয়েছিল ৫০ ওভারের ওয়ানডে ফরম্যাটে। আর এবারই প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। ওয়ানডেতে সমীহ-জাগানিয়া শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলেও বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সক্ষমতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল এশিয়া কাপ শুরুর আগেও। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে যে সত্যিই নতুন যুগ শুরু হয়েছে, সেটা বোঝাতে বেশি সময় নেননি মাশরাফিরা। প্রথম ম্যাচে দারুণ ফর্মে থাকা ভারতের বিপক্ষে হারলেও আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লাল-সবুজের দল।
আর টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের মধুর স্মৃতিও খুব বেশি পুরোনো নয়। গত বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ সফরে এসে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল পাকিস্তানকে। সেটাও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই। এবারের এশিয়া কাপেও পাকিস্তান আছে নড়বড়ে অবস্থায়। প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে হারের পর আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিততেও বেশ কষ্ট করতে হয়েছে পাকিস্তানকে।
২০১২ সালের সেই ম্যাচের বেশির ভাগ খেলোয়াড় আছেন এবারের বাংলাদেশ দলেও। ইনজুরির কারণে মুস্তাফিজের ছিটকে পড়াটা অবশ্য বাংলাদেশের জন্য একটা অপূরণীয় ক্ষতি। তবে আশার কথা, সদ্য সন্তানের বাবা হওয়া তামিম ইকবাল আবার ফিরছেন প্রথম একাদশে। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে অর্ধশতক করা সাব্বির রহমান এবারও আছেন দারুণ ফর্মে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত ম্যাচেই খেলেছেন ৮০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। প্রথম দুই ম্যাচে নিষ্প্রভ হয়ে থাকা সাকিব আল হাসানও ফিরতে শুরু করেছেন ছন্দে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাট হাতে ৩২ রানের পর বল হাতেও নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়টা খুব দূরের কিছু মনে হচ্ছে না।