‘অপ্রতিরোধ্য’ রিয়ালের সামনে ‘অনভিজ্ঞ’ ম্যানসিটি
শুধু স্পেন নয়, ইউরোপেরও সবচেয়ে সফল দল রিয়াল মাদ্রিদ। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দলটি ইউরোপের সেরা ফুটবল প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নস লিগে রেকর্ড ১০ বারের চ্যাম্পিয়ন। এই প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি ২৭ বার সেমিফাইনালে ওঠার কৃতিত্বও তাদের। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা দল হলেও ইউরোপীয় পর্যায়ে ম্যানচেস্টার সিটির তেমন সাফল্য নেই। আজ মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে তাই ‘অভিজ্ঞতা’র হিসাবে কিছুটা পিছিয়েই থাকবে ম্যানসিটি। যদিও খেলা হবে তাদের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে।
এ মৌসুমের শুরু থেকেই ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেতে হচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। অনেক পিছিয়ে পড়ায় দুই মাস আগেও স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন রিয়ালের কোচ জিনেদিন জিদান। তবে দুঃসময়কে পেছনে ফেলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে জিদানের শিষ্যরা। মার্চের শুরু থেকে টানা ৯ ম্যাচ জিতে বাঁচিয়ে রেখেছে শিরোপা ফিরে পাওয়ার আশা। লিগের শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে আছে রিয়াল। আর চ্যাম্পিয়নস লিগে চলে গেছে শেষ চারে।
অবস্থার এতটা উন্নতিতে জিদান অভিভূত। এই ফরাসি-কিংবদন্তির চোখে এখন দুই বছর আগের পুনরাবৃত্তির স্বপ্ন। ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও শেষ মুহূর্তের গোলে সমতা এনে এবং অতিরিক্ত সময়ে তিন গোল করে দশমবারের মতো ইউরোপসেরা হয়েছিল রিয়াল। রিয়ালের সেই দলের সহকারী কোচ জিদান আরেকটি শিরোপা-স্বপ্নে বিভোর, ‘২০১৪ সালে আমাদের ড্রেসিং রুমের পরিবেশ একই রকম ছিল। আমি লক্ষ করেছি, আমাদের সব খেলোয়াড় দারুণ উজ্জীবিত, একাগ্র। তারা লক্ষ্যের প্রতি অবিচল।’ আজকের ম্যাচ নিয়ে রিয়ালের তারকা কোচের অভিমত, ‘আমরা এখন ফাইনালের পথে। আমরা জানি যে কাজটা খুব কঠিন। তবে আমরা সবকিছুর জন্য প্রস্তুত। আপাতত ৯০ মিনিটের দিকে আমাদের সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। আগামী সপ্তাহে মাদ্রিদে ফিরতি লেগ। আমাদের তাই এখন মঙ্গলবারের ম্যাচের দিকে লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে।’
আজকের ম্যাচের আগে রিয়ালের জন্য সুখবর, চোট কাটিয়ে ফিরছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও করিম বেনজেমা। উরুর পেশিতে টান পড়ায় গত শনিবার লা লিগায় রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে খেলতে পারেননি রোনালদো। আর হাঁটুর সমস্যার কারণে বিরতির কিছুক্ষণ আগে মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন বেনজেমা। তবে চোট কাটিয়ে দুই তারকাই এখন সুস্থ। জিদান জানিয়েছেন, দুজনই শতভাগ ফিট।
রিয়ালের ঠিক বিপরীত অবস্থা ম্যানসিটির। উরুর চোটের কারণে আজ খেলতে পারছেন না স্বাগতিকদের অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার ইয়াইয়া তুরে। একে তো তুরে নেই, তার ওপরে চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৬টিসহ মৌসুমে ৪৭ গোল করা রোনালদোর প্রত্যাবর্তন। ঘরের মাঠে খেলা হলেও ম্যানসিটি তাই কিছুটা হলেও চাপের মুখে।
কোচ মানুয়েল পেল্লেগ্রিনি অবশ্য রিয়ালের গোল-মেশিনকে ঠেকানোর ব্যাপারে প্রত্যয়ী, ‘আমি যখন ভিয়ারিয়ালের কোচ ছিলাম, তখন আমার দল ওর (রোনালদোর) দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলেছিল। সেই সুবাদে আমি তাকে ভালোমতোই চিনি। আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগে চারবার মুখোমুখি হয়েছিলাম। আর প্রতিবারই খেলা শেষ হয়েছিল গোলশূন্যভাবে। তাই এ কথা বলাই যায় যে রক্ষণাত্মকভাবে আমরা সঠিক কাজই করেছিলাম।’