নাদালের স্মার্ট র‍্যাকেট!

Looks like you've blocked notifications!
নাদালের সেই স্মার্ট র‍্যাকেট। নিচে পারফরম্যান্স নির্ণায়ক অন-অফ সুইচ।

র‍্যাকেটটা দেখতে ঠিক অন্য র‍্যাকেটের মতো। কিন্তু ‘কর্মকাণ্ডে’ রাফায়েল নাদালের নতুন র‍্যাকেট অনেকটা ভিন্ন। স্মার্টফোনের মতো নাদালের এই র‍্যাকেটকে বলা হচ্ছে ‘স্মার্ট র‍্যাকেট’। স্প্যানিশ টেনিস তারকার নতুন এই র‍্যাকেটের হাতলে আছে একটা অন-অফ সুইচ, যা দিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রেকর্ড করা যায় পারফরম্যান্সের খতিয়ান।

নাদালের এই স্মার্ট র‍্যাকেট তৈরি করেছে ফরাসি কোম্পানি বাবোলা। ম্যাচের আগে সুইচটা অন করে দিলে জানা যায় খেলার সময় র‍্যাকেটের কোন জায়গায় বলগুলো লেগেছে। কতগুলো শট ব্যাকহ্যান্ডে আর কতগুলো ফোরহ্যান্ডে খেলা হচ্ছে সেটাও নির্ণয় করা যায় র‍্যাকেটের সঙ্গে যুক্ত অ্যাপসটির মাধ্যমে। ম্যাচ বা অনুশীলন শেষে তথ্যগুলো জমা করা যায় কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে। 

তথ্যগুলো পর্যালোচনার মাধ্যমে সহজেই বিশ্লেষণ করা যায় সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের সক্ষমতা ও দুর্বলতা। যেমনটি নাদাল বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম রাউন্ডে জিতে, ‌‘আমি জানি ভালো খেলার জন্য আমাকে ৭০ ভাগ শট খেলতে হবে ফোরহ্যান্ডে। ৩০ ভাগ ব্যাকহ্যান্ডে। যদি আমি সেটা না করতে পারি তাহলে বোঝা যাবে যে আমি কোর্টে ঠিকমতো খেলতে পারছি না। এই র‍্যাকেটটা দিয়ে সে সব নির্ণয় করা যায়।’ 

বিষয়টি আরো ভালোভাবে ব্যাখ্যা করেছেন এই স্মার্ট র‍্যাকেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাবোলার মুখপাত্র থমাস ওতোন। গত ১৬ জানুয়ারি নাদালের অনুশীলনের তথ্য রেকর্ড করে তিনি দেখিয়েছেন, দেড় ঘণ্টার অনুশীলনে এই স্প্যানিশ তারকা ৫৭২টি শট খেলেছেন। এর মধ্যে ছিল ১৫৬টি ব্যাকহ্যান্ড, ২২২টি ফোরহ্যান্ড, ১১৮টি সার্ভ ও ৭৬টি স্ম্যাশ।

আরও বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা সম্ভব। যেমন, নাদালের ফোরহ্যান্ড শটগুলোর মধ্যে ১৩৩টি ছিল টপস্পিন, ৪৯টি স্লাইস ও ৪০টি ফ্ল্যাট।

র‍্যাকেটের কোন অংশে বল লেগেছে সেটাও নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নতুন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে। অনুশীলনের সময় ৪২ শতাংশ শটই নাদাল খেলেছেন র‍্যাকেটের মাঝখান দিয়ে। ২০ শতাংশ ছিল র‍্যাকেটের ওপরের অংশ দিয়ে। বাকি ৩৮ শতাংশ শটে বল লেগেছিল র‍্যাকেটের নিচের ও পাশের অংশে। 

স্মার্ট র‍্যাকেট যে টেনিস খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স যাচাইয়ের ক্ষেত্রে নতুন এক মাত্রা যোগ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন অবশ্য এতদিন কোনো প্রতিযোগিতায় এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছিল। কিন্তু এই জানুয়ারিতে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। তাই নাদালও খেলতে পারছেন এই র‍্যাকেট দিয়ে। তবে কোনো ম্যাচ চলার সময় খেলোয়াড়রা এ তথ্যগুলো দেখতে পারবেন না। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তাঁরা দেখে নিতে পারবেন নিজেদের ভুল-ত্রুটি বা অন্যান্য বিষয়। 

আপাতত নাদাল এই সুবিধা পেলেও হয়তো কিছুদিনের মধ্যে সব পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়ের  হাতেই দেখা যাবে এই স্মার্ট র‍্যাকেট।