অবসরের পর কী করবেন বোল্ট?

Looks like you've blocked notifications!

বর্ণিল অ্যাথলেটিকস ক্যারিয়ারের প্রায় শেষপ্রান্তে চলে এসেছেন উসাইন বোল্ট। টানা তিনটি আসরের তিনটি ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয়ের অনন্য রেকর্ড গড়ে বিদায় বলেছেন অলিম্পিককে। আগামী বছর বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপেই হয়তো শেষবারের মতো ট্র্যাকে দেখা যাবে বোল্টকে। এরপর কী করবেন বিশ্বের দ্রুততম মানব? জ্যামাইকান এই অ্যাথলেট নিজে হয়তো এখনো অতশত ভাবছেন না। কিন্তু বোল্টের জীবনের পরবর্তী অধ্যায় নিয়ে অনেক রকম চিন্তাভাবনাই করে ফেলেছেন অনেকে।

অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে যা কিছু পাওয়া সম্ভব, তার প্রায় সবই পেয়েছেন বোল্ট। ইতিহাসের প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে অলিম্পিকের তিনটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে টানা তিন আসরেই জিতেছেন স্বর্ণপদক। অ্যাথলেটিকসের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ১১টি স্বর্ণও গলায় ঝুলিয়েছেন বিশ্বের দ্রুততম মানব। ১০০, ২০০ ও ৪X১০০ মিটার রিলে ইভেন্টের বিশ্বরেকর্ডও আছে বোল্টের দখলে। অ্যাথলেটিকসের মতো জীবনের অন্যান্য পর্যায়েও তিনি অর্জন করতে পারেন নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী যেকোনো কিছু। সর্বকালের অন্যতম সেরা অ্যাথলেটের জন্য খোলা আছে সব ধরনের রাস্তা। সেটা ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে রাজনীতি পর্যন্তও যেতে পারে।

জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোনেস খুব করেই চাইছেন যেন বোল্ট রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রাখেন। নিজের খ্যাতি ও অর্জন দিয়ে তিনি জ্যামাইকার উন্নয়নে অনেক অবদান রাখতে পারেন বলেই মনে করছেন হোনেস। গত সোমবার রিও ডি জেনিরোতে এক সংক্ষিপ্ত সফরে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘উসাইন বোল্টের খ্যাতি ও অর্জন জ্যামাইকার উন্নয়নের কাজে লাগাতে পারাটা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তিনি চাইলে যেকোনো বিভাগের মন্ত্রী হতে পারেন।’

অলিম্পিয়ান থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়ার উদাহরণও অনেক আছে। ১৯৬৪ সালের অলিম্পিকে অংশ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিল ব্রাডলি পরবর্তীতে ১৮ বছর ধরে ছিলেন সিনেট সদস্য। কেনিয়ার সংসদ সদস্য ওয়েসলি কোরির এবারের রিও অলিম্পিকের ম্যারাথনেও অংশ নিতে এসেছেন ছুটি নিয়ে।

স্পন্সর পুমার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রস্তাবও আছে বোল্টের সামনে। রিও অলিম্পিক শুরুর আগে পুমার প্রধান নির্বাহী বোহর্ন গুলডেন বলেছিলেন, ‘উসাইন পুমা পরিবারের অংশ। যদি তিনি আর না দৌড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমরা তাঁর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারি।’

অ্যাথলেটিকসকে বিদায় বলার পর পুরোদস্তুর ব্যবসায়ীও বনে যেতে পারেন বোল্ট। এরই মধ্যে জ্যামাইকার রাজধানী কিংসটনে ‘ট্র্যাকস অ্যান্ড রেকর্ড’ নামের একটা রেস্তোঁরাও খুলে ফেলেছেন তিনি। ক্রিকেট বা ফুটবলের মতো খেলাধুলার অন্যান্য অঙ্গনে পা রাখার কথাও আগে শোনা গেছে বোল্টের মুখ থেকে। শেষপর্যন্ত জ্যামাইকান এই স্প্রিন্টার কোন পথে হাঁটবেন, তা দেখার জন্য অপেক্ষাতেই থাকতে হবে ভক্তদের।

কারণ বোল্ট নিজে এখনো এ ব্যাপারে কিছু বলতে নারাজ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বরং কিছুটা অসন্তুষ্টিই দেখিয়েছেন তিনি, ‘আমি জানি না কী করব। এই প্রশ্নগুলো করে আপনারা আমাকে চাপের মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন।’ তবে একটা পথে যে তিনি কখনোই হাঁটবেন না সেটা স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন বোল্ট, ‘আমি খেলাধুলার সঙ্গেই থাকতে চাই। আমরা দেখব ভবিষ্যতে কী হয়। তবে সেটা অবশ্যই কোচিং সংশ্লিষ্ট কিছু হবে না।’