ক্রিকেটের গর্ব খান পরিবার

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে খান পরিবার। বাঁ থেকে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান, নাফিজ ইকবাল ও তামিম ইকবাল। ছবি : এনটিভি
 

আইসিসি ট্রফিতে হল্যান্ডের বিপক্ষে আকরাম খানের ৬৮ রানের ওই ইনিংসেই দাঁড়িয়ে আজকের বাংলাদেশের ক্রিকেট। আর ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের সাথে জড়িয়ে আছে তাঁর ভাতিজা নাফিস ইকবালের দ্বিতীয় ইনিংসের সেঞ্চুরিটি। চাচা, বড় ভাইকে ছাপিয়ে তামিম ইকবাল নিজেকে নিয়ে গেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে অনন্য এক উচ্চতায়। টেস্ট কী ওয়ানডে সব জায়গায় তাঁর দাপুটে পদচারণা। সব শেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই শ রান করে তামিম নিজের নামটি তুলেছেন দেশের পক্ষে  সর্বাধিক সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান তালিকার শীর্ষে। 

১৯৯৭ সাল। মালয়েশিয়ায় সেদিন হল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেই অবস্থায় দলকে একাই সামনে থেকে টেনে তুলেছিলেন অধিনায়ক আকরাম খান।  আকরামের ৬৮ আর নান্নুর ২২ রানে ভর করেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেদিনের সেই ম্যাচে আকরামের ফিফটি না এলে আইসিসি ট্রফির ফাইনালে উঠা হতো না বাংলাদেশের।urgentPhoto 
আকরাম খান এনটিভিকে বলেন, 'আমি যখন খেলা শুরু করেছি তখন কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য ছিল আমরা সেরা পর্যায়ে যেন যেতে পারি। আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা গর্ববোধ করছি। বাংলাদেশ ক্রিকেটে শুরু থেকে আমরা খেলে আসছি এবং ভালো, গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আমাদের অবদান আছে।'  

২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর; ২০০৫ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়।  কিন্তু এই টেস্টে এনামুল হক জুনিয়র ছয় উইকেট নিলেও; দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের জয়ে বড় ভূমিকা ছিল ৩৫৫ বলে নাফিস ইকবালের ১২১ রানের শতরানটি। এই ম্যাচে শুধু নাফিস ইকবাল সেঞ্চুরি করেননি উইকেটে থেকেছেন ৪৭০ মিনিট। তাই বাংলাদেশের যেকোনো জয় মানেই যেন খান পরিবারের কারো না কারো অবদান। 

নাফিস ইকবাল এনটিভিকে বলেন, 'আমি যখন জাতীয় দলে ছিলাম, তখন আমি মানুষকে বলতাম আমার খেলা কি, আমার ছোট ভাই আসতেছে সে আমার চেয়ে দশগুণ ভালো খেলোয়াড়। অনেকে এটা নিয়ে হাসত। কিন্তু দেখেন সে (তামিম) এটা প্রমাণ করেছে।'

আকরাম নাফিসের বাংলাদেশের ক্রিকেটে আর্বিভাব হয় ড্যাসিং তামিম ইকবালের। জীবনের প্রথম সফরেই ভারতের বিপক্ষে জয়ে তাঁর অবদান। এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক কীর্তির সাথে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম। সব শেষ ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডের পর; টেস্টেও হাকালেন ডাবল হানড্রেড। যে ইনিংস বাংলাদেশের  ক্রিকেটকে তুলে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। 
ওই টেস্ট শেষে তামিম ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, 'ডাবল সেঞ্চুরি করে অবশ্যই একটা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এর জন্য আমি অনেক খুশি। যখনই আমি চিন্তা করি ক্রিকেটার হিসাবে কী হতে চাই,ধীরে ধীরে যদি আমি তাও অর্জন করতে পারি, তাহলে আমি সবচেয়ে খুশি হব।'  
 
খান পরিবারের এই তিন ক্রিকেটারের সমালোচনা কম হয়নি। কিন্তু এঁরা যখনই সুযোগ পেয়েছেন তখনই দুই হাত ভরে দিয়ে গেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে। আর এবার এমন এক সময় তামিম ইমরুলকেনিয়ে বিশ্ব-রেকর্ড গড়লেন যখন পাকিস্তানের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সেই অবস্থায় টেস্ট বাঁচানো এবং টেস্ট ড্র করা দুটোই ছিল অসাধ্য একটি কাজ। যা রচিত হলো সেই খান পরিবারেরছোট ছেলে তামিমের হাত ধরে। ব্রাভো তামিম  ব্রাভো।