যুব বিশ্বকাপে তীরে এসে ডুবল বাংলাদেশের আশার তরী
সেমিফাইনাল নিশ্চিতে ১৫৬ রানের লক্ষ্য ৩৮.১ ওভারের আগেই টপকাতে হতো বাংলাদেশকে। কে জানত, সমীকরণের এই চাপেই ভেঙে পড়বে রাব্বি-শিবলীরা। টপ অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও শেষদিকে জয়ের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন মারুফ ও বর্ষণ। যদিও শেষ হাসিটা আর হাসতে পারেননি তারা। মাত্র পাঁচ রানের আক্ষেপ নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলো বাংলাদেশকে।
আজ শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিতে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪০.৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৫৫ রান তোলে পাকিস্তান। বাংলাদেশের হয়ে বর্ষণ ও জীবন চারটি করে উইকেট নেন। জবাবে ৩৫.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানে থামে বাংলাদেশ।
সমীকরণ অনুযায়ী, সেমিতে যেতে বাংলাদেশকে জিততে হতো ৩৮.১ ওভারে। সেই হিসেব মাথায় রেখে ব্যাট হাতে দারুণ শুরু করেন দুই ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলী ও জিসান আলম। তবে, দলীয় ২৬ রানের মাথায় জিসানের বিদায়ে প্রথম ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। উবাইদ শাহ এর বলে সাদ বেগের হাতে ক্যাচ তুলে ফেরেন জিসান। আউটের আগে করেন ১২ বলে ১৯ রান।
জিসানের বিদায়ে পর আরেক ওপেনার শিবলীও ক্রিজে থিতু হতে পারেনি। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় উবাইদ শাহ এর দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন শিবলী। ১১ বলে চার রান আসে তার ব্যাট থেকে। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেই চাপ আরও বাড়ে রিজওয়ানের বিদায়ে। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় আলি রেজার বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। ৩০ বলে ২০ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
রিজওয়ানের বিদায়ের পর আহরার আমিনকে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন আরিফুল। এই জুটিতে যোগ হয় আরও ২৯ রান। তবে, দলীয় ৭৬ রানের মাথায় আহরারের বিদায়ে বড়সড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। তার বিদায়ের মাত্র সাত রানের মাথায় আরও দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৮৩ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে জয়ের পথ কঠিন করে তোলে বাংলাদেশ।
পরবর্তীতে শিহাব জেমস ও অধিনায়ক রাব্বির ব্যাটে ভর করে ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। ফের ছন্দপতন, দলীয় ১২৩ রানের মাথায় বিদায় নেন শিহাব। ৪৩ বলে ২৬ করে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার। এর এক রান পরই ফেরেন অধিনায়াক রাব্বি। শেষ জুটিতে বর্ষণ-মারুফ ৩০ রানের জুটি গড়লেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমেই শুরুতে ধরে খেললেও আস্তেধীরে চড়াও হয়ে ওঠেন দুই পাকিস্তানি ওপেনার শামিল হুসেন ও শাহজাইব খান। দুইজনের দারুণ ব্যাটিং যখন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক তখনই আঘাত করেন বর্ষণ। ৩১ রান করা শামিলকে ফেরান এই পেসার। এরপর ক্রিজে এসে টিকতে পারেননি আজান আওয়াইসও।
বাকি সময়ে একপ্রান্ত আগলে রাখেন শাহজাইব। তবে অন্যপ্রান্তে তখন উইকেটে যাওয়া-আসার মিছিল। এই মিছিলে একে একে যোগ দিতে থাকেন সাদ বেগ, আহমেদ হাসান, হারুন আরশাদ। সতীর্থদের এমন আসা-যাওয়ার মিছিলে দেখে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন শাহজাইবও। আউট হওয়ার আগে ৬৭ বলে করেন ২৬ রান। শেষমেশ ১৫৫ রানে থামে পাকিস্তান।