ডাচদের হৃদয় ভেঙে ইউরোর ফাইনালে ইংল্যান্ড
ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে গিয়েও ব্যবধান ধরে রাখতে পারল না নেদারল্যান্ডস। পাল্টা গোল দিয়ে লড়াইয়ে ফেরে ইংল্যান্ড। সেই ১-১ গোলের সমতা পুরো নির্ধারিত সময়ে আর বদলায়নি। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে পাশার দান বদলে দেন অলি ওয়াটকিন্স। তাতেই নির্ধারণ হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। শেষ মুহূর্তে অরেঞ্জ আর্মিদের স্বপ্নভেঙে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড।।
বুধবার দিবাগত ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ চারের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ডাচদের হয়ে গোল করেছেন জাভি সিমন্স। আর ইংল্যান্ডকে জেতাতে গোল করেছেন হ্যারি কেইন ও ওয়াটকিন্স।
এর আগে নির্ধারণ হয়ে গেছে প্রথম ফাইনালিস্ট। প্রথম সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে স্পেন। এবার ডাচদের বিদায় করে দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট হিসেবে ফাইনালে পা রেখেছে ইংল্যান্ড। দুদলের শিরোপা যুদ্ধ হবে আগামী ১৫ জুলাই।
সবশেষ ১৯৮৮ সালে ইউরোর ফাইনাল খেলেছিল নেদারল্যান্ডস। সেবার সোভিয়েত ইউনিয়নকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রুড গুলিত ও রোনাল্ড কোম্যানরা। ৩৬ বছর পর আবার ইউরোর ফাইনালে ওঠার হাতছানি ছিল নেদারল্যান্ডসের সামনে। কিন্তু অরেঞ্জ আর্মিরা পারল না স্বপ্ন ছুঁতে। ইংলিশদের অভিজ্ঞতার কাছ হার মেনে সেমি থেকেই বিদায় নিতে হলো ডাচদের।
জিতলেই স্বপ্নেই ফাইনাল। হারলে বিদায়। এমন সমীকরণের ম্যাচে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস। ফাইনালে ওঠার মহারণটিতে ৫৯ ভাগ সময় বল দখলে রেখে ৯ বার আক্রমণে যায় ইংল্যান্ড। যার পাঁচটিই ছিল অনটার্গেটে যাওয়ার মতো। অন্যদিলে ৪১ ভাগ সময় বলের নাগাল পাওয়ায় নেদারল্যান্ডস আক্রমণ করে সাতবার। যাতে দুটি ছিল অনটার্গেটের।
দখল-আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও ম্যাচের প্রথম গোলটি আসে নেদারল্যান্ডসের পক্ষ থেকে। ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই জালের দেখা পায় ডাচরা। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে নিজের একার দৃঢ়তায় লক্ষভেদ করেন জাভি সিমন্স। জাতীয় দলের হয়ে এটি তার দ্বিতীয় গোল।
পিছিয়ে যাওয়ার হতাশা কাটিয়ে নিজেদের গুছিয়ে নেয় ইংলিশরা। ম্যাচের ১২ মিনিটেই আক্রমণে যান হ্যারি কেইন। তবে ইংলিশ অধিনায়কের দূর পাল্লার শট যায়নি ঠিকানায়। দুই মিনিট পর আবারও সুযোগ তৈরি করেন সাকা।
তবে প্রতিপক্ষের ডি বক্সের সামনে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারান সাকা। বল হাল্কা করে বাড়িয়ে দেন কেইনের দিকে। কেইনও শট নেন। তবে, ডাচ গোলকিপার তা ঠেকিয়ে দেন। গোলকিপার ঠেকিয়ে দিলেও ডি বক্সে ফাউলের শিকার হয়ে পেনাল্টি পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। সেখানেই সফল স্পট কিকে দলকে সমতায় ফেরান ইংল্যান্ড অধিনায়ক কেইন।
ইংল্যান্ড সমতায় ফেরার পর ডর্টমুন্ডে জমে ওঠে ম্যাচটি। বিরতির পর চলে দুদলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। কিন্তু কোনোটিতেই মেলেনি গোলের দেখা। এক পর্যায়ে মনে হয় ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়াবে। কিন্তু না দলের অপেক্ষা তত দীর্ঘ হতে দেননি ওয়াটকিন্স।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার পর দৃশ্যপট পাল্টে দেন ওয়াটকিন্স। সতীর্থ পামার পাস ধরে ডি বক্সের ডান দিক থেকে আড়াআড়ি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ওয়াটকিন্স। যে গোলেই নিশ্চিত হয়ে গেল ইংল্যান্ডের ফাইনালের টিকিট। অন্যদিকে হতাশায় ডোবা ডাচরাও ধরল বাড়ির পথ।