ইংল্যান্ডকে হতাশায় ডুবিয়ে এক যুগ পর ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেন
ফর্ম, পরিসংখ্যান সবকিছুর বিচারে এই ম্যাচে ফেভারিট হিসেবে মাঠে নেমেছিল স্পেন। ইউরোপের রাজা হবার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল হ্যারি কেইন, জুড বেলিংহামদের মতো তারকায় ঠাসা ইংল্যান্ড। কিন্তু ফাইনালের মহারণে অভিজ্ঞ ইংল্যান্ড পেরে ওঠেনি তারুণ্যদীপ্ত স্পেনের সঙ্গে। লামিন ইয়ামাল-নিকো উইলিয়ামসদের নৈপুণ্যে এক যুগ পর ইউরোর শিরোপা ঘরে তুলল স্প্যানিশরা। ইউরোর ইতিহাসে একমাত্র দল হিসেবে চারটি শিরোপা ঘরে তুলল লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা।
আজ সোমবার (১৫ জুলাই) ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে বার্লিনের অলিম্পিয়া পার্কে ২-১ গোলে জিতেছে স্পেন। এই জয়ে এক যুগ পর শিরোপা ঘরে তুলল স্পেন। এর আগে ২০১২ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। ইংল্যান্ড নেমেছিল ‘ফুটবল কামিং হোম’ স্লোগানে বলীয়ান হয়ে। সেই ১৯৬৬ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে শিরোপা খরায় ভুগছে তারা। এই পরাজয় তাদের সেই অপেক্ষা আরও বাড়িয়েছে। এমনকি এ নিয়ে ইউরোতে টানা দুটি ফাইনাল হারল ইংলিশরা।
মনোমুগ্ধকর কনসার্টের পর শুরু হয় ম্যাচ। শুরু থেকেই বল দখলে এগিয়ে ছিল স্প্যানিশরা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে লামিন ইয়ামালের কল্যাণে প্রথম আক্রমণে যায় স্পেন। তবে, দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি এই ১৭ বছর বয়সী তারকা।
এরপর ম্যাচের ১২তম মিনিটে উইলিয়ামসের বাঁ-পায়ের জোরালো শট দারুণ দক্ষতার সঙ্গে ঠেকিয়ে দেন ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার স্টোনস। ম্যাচের ১৫তম মিনিটে প্রথমবার আক্রমণে যায় ইংল্যান্ড। ডানপ্রান্ত দিয়ে কাইল ওয়াকার এগিয়ে গেলেও ঠিকঠাক ক্রস করতে পারেননি। প্রতিপক্ষের গায়ে লাগলে কর্নার পায় ইংলিশরা। যদিও তা কাজে লাগাতে পারেনি সাউথগেটের দল।
ম্যাচের ২৮তম মিনিটে ফ্যাবিও রুইজ গোলপোস্ট বরাবর শট করলেও গতি না থাকায় সেযাত্রায় সাফল্য পায়নি স্পেন। যোগ করা সময়ে ইংল্যান্ডের ফিল ফোডেন শট করলেও তা সহজেই তালুবন্দী করেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন। বাকি সময়ে আরও বেশি কিছু আক্রমণ করলেও খালি হাতেই বিরতিতে যেতে হয় দুদলকে।
তবে, বিরতি থেকে ফিরেই লিড নেয় স্পেন। ৪৭তম মিনিটে লামিন ইয়ামালের ক্রস থেকে বাঁ-প্রান্ত দিয়ে দারুন ফিনিশিং করেন নিকো উইলিয়ামস। ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে আক্রমণ আরও বাড়ায় স্পেন। ম্যাচের ৫৩তম মিনিটে আরও একটি গোল পেয়ে যেতে পারত স্পেন। লামিনের বাড়ানো বলে অধিনায়ক মোরাতার শট ঠেকিয়ে দলকে রক্ষা করেন স্টোনস। ফিরতি শটে চেষ্টা করলেও বল জালে জড়াতে পারেননি উইলিয়ামস।
৬৩তম মিনিটে ডি-বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে শট করলেও বল গোল অভিমুখে রাখতে পারেননি ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহাম। ৬৫তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে যান ইয়ামাল। বাঁ-পায়ে গড়ানো শট করলেও অসাধারণ সেভে ইয়ামালকে হতাশ করেন ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। একের পর এক আক্রমণের পর ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে সমতায় ফেরে ইংলিশরা। কেনের বদলি হিসেবে নেমে গোল করেন বসেন পালমার। অবশ্য বেশিক্ষণ এগিয়ে থাকতে পারেনি দলটি।
শেষ বাঁশির ৪ মিনিট আগে জয়সূচক গোল করেন ওয়ারজাবাল। শেষ দিকে গোল লাইন থেকে বল বাঁচিয়ে স্পেনকে রক্ষা করেন ওলমো। এতেই চ্যাম্পিয়ন হওয়া আনন্দে মেতে ওঠে স্প্যানিশরা।