দুদিন আগেও দেশের ক্রিকেট ভক্তরা মুখিয়ে ছিলেন সাকিব আল হাসানের বিদায়ী ম্যাচের জন্য। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাকিব খেলবেন। সেই ম্যাচ দিয়ে নিজ দেশের ভক্তদের সামনে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। সবকিছুর বন্দবস্তও হয়েছিল। 

নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশের পথে রওনা দেন সাকিব। কিন্তু দুবাই আসার পর থেকেই ঘুরে যায় চিত্রনাট্য। নিরাপত্তা ইস্যুতে সাকিবকে দেশে না ফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর নাটকীয়তার পর শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরতে পারেননি আর সাকিব। ফলে দেশের মাটিতে বিদায়ী টেস্টও আর খেলা হচ্ছে না তার। 

দেশসেরা ক্রিকেটারের স্বপ্ন সত্যি না হওয়ার যন্ত্রণা পোড়াচ্ছে অনেককেই। ব্যতিক্রম নন তার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও। নিজের ফেসবুকে লম্বা স্ট্যাটাস দিয়ে সেই কথাই জানালেন সালাউদ্দিন। 

নিজের কষ্ট লাগা ব্যাখ্যা করে সালাউদ্দিন লিখেছেন, 'দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি কখনোই এতো রাগ বা কষ্ট লাগে নাই, আজ কেন যেন লাগছে। আমরা মানুষ কি কখনও নিজেরা ভুল করি না? কেউ অনুতপ্ত হলে তাকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিৎ, কিন্তু আমরা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি মানুষ হিসেবে, দয়া-মায়া জিনিসটা আমাদের মধ্যে থেকে উঠে গেছে। একটা মানুষ দেশের জন্য ১৭টা বছর কিছু না কিছু করেছে, আজ ক্রিকেটবিশ্ব আমাদের একটু সম্মান করে কাদের জন্য? তারা ক্রিকেট মাঠে নামতে পারবে না, এই কান্না তো সবাই দেখবে না। রাজনীতি করছে বলে এরা খুনি? এদের সাথে মিশেছেন? এরা কত মানুষের ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে জানেন আপনি? এরা কত অসহায় মানুষের চিকিৎসা করাইছে সেটা কী জানেন?' 

সাকিবের ছোটবেলার কোচ আরও লেখেন, 'তারা স্ট্যাটাস না দেওয়ার কারণে আজ শত্রু, যখন মাশরাফি ৫টা অপারেশন করে দেশের জন্য লড়াই করছে তা কী দেখছেন? সাকিব যে আঙুলে চিড় নিয়া বোলিং করে গেছে, তামিম এক হাতে ব্যাটিং করে গেছে কাদের জন্য? দেশকে সবাই কম-বেশি ভালোবাসে, এদের ভালোবাসাটা হয়তো দেখা যায়ও না, এদের কাছ থেকে দেখেছি, এরা মানুষের উপকার ছাড়া কারও ক্ষতি করেনি, এরা খুনি না। খুব কষ্ট পাচ্ছি মাঠ থেকে এদের বিদায় দেখতে পাব না।' 

'মানুষকে মাফ করুন, আল্লাহ আমাদের অনেক অপরাধ মাফ করে দেবেন। আমরা সবাই কম-বেশি অপরাধী, সম্মান কাউকে দিলে আপনিও সন্মানীত হবেন।'-শেষে যোগ করেন সালাউদ্দিন।