রংপুরকে প্রথম হারের লজ্জা দিল রাজশাহী
রংপুর রাইডার্স মাঠে নামবে আর জিতবে, এটি যেন নিয়মই হয়ে গিয়েছিল। চলমান বিপিএলে টানা আট ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল রংপুর। হয়ে উঠেছিল অপ্রতিরোধ্য। অবশেষে প্রথম হারের তিক্ততা পেয়েছে দলটি। রংপুরকে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ২৪ রানে হারিয়েছে দুর্বার রাজশাহী।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে রাজশাহীকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় রংপুর। আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭০ রান তোলে রাজশাহী। জবাবে ১৯.২ ওভারে ১৪৬ রানে অলআউট হয় রংপুর।
দুর্দান্ত ছন্দে থাকা রংপুরের জন্য ১৭১ রান খুব বড় লক্ষ্য ছিল না। তবে, দুই ওপেনার ব্যর্থ হন। মেহেরবের বলে ৪ রান করে বোল্ড হন স্টিভেন টেইলর। রানের খাতা খোলার আগেই তাসকিন আহমেদ বোল্ড করেন ইরফান শুক্কুরকে। ওয়ানডাউনে নেমে সাইফ হাসান দলের বিপদ সামাল দেন। ২৯ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৩ রান আসে সাইফের ব্যাট থেকে। তাকে বিদায় করেন শফিউল ইসলাম।
তবে, রাজশাহীকে বড় ব্রেক থ্রু এনে দেন মেহেরব। ইফতিখার আহমেদকে প্রথম বলেই বিদায় করেন। খুশদীল শাহও ১৩ বলে ১৪ রানে আউট হলে বিপদ আবার বাড়ে রংপুরের। শেষ ভরসা হয়ে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ছিলেন। যতক্ষণ তিনি ক্রিজে ছিলেন, রংপুরের আশা বেঁচে ছিল। ২৬ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ করে রায়ান বার্লের শিকারে পরিণত হন সোহান। শেষ হয় রংপুরের জয়ের আশা। শেষদিকে ১৪ বলে ২৩ রান করে হারের ব্যবধানই কেবল কমাতে পেরেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
রাজশাহীর পক্ষে রায়ান বার্ল ৪ ওভারে ২২ রানে ৪ উইকেট নেন। দুটি করে উইকেট পান তাসকিন ও মেহেরব।
এর আগে ব্যাট হাতে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দেন রাজশাহীর দুই ওপেনার মোহাম্মদ হারিস ও সাব্বির হোসেন। প্রথম ওভারেই জীবন পান হারিস। পাকিস্তানের এই ওপেনার রাকিবুল হাসানের করা দ্বিতীয় বলে এক্সট্রা কাভারে একটি চার মারেন। এর দুই বল পরে মিড অনে সহজ ক্যাচ দেন তিনি। স্টিভেন টেলর ক্যাচটি ধরতে পারেননি।
প্রথম দুই ওভারেই রাজশাহীর স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ২০ রান। এরপরই ছন্দপতন! রাকিবুল হাসানের বলে এক্সট্রা কাভারে খুশদিল শাহ এর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হারিস। ১২ বলে ১৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন সাব্বির। পাওয়ার প্লেতে দলটি তোলে ৬৪ রান। ব্যাট হাতে রীতিমত ঝড় তোলেন সাব্বির। একটা সময় মনে হচ্ছিল ২০০ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়বে তারা, যদিও রংপুরের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেটি আর সম্ভব হয়নি।
শেষমেশ সেই জুটি ভাঙেন খুশদীল শাহ। দলীয় ৭৬ রানের মাথায় সাইফউদ্দিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। আউটের আগে খেলেন ১৯ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। সাব্বির বিদায়ের পরের বলেই ফেরেন আরেক ব্যাটার রায়ান বার্ল। রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। হঠাৎ দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রাজশাহী।
তবে, এনামুল বিজয় ও ইয়াসির রাব্বির ব্যাটে সেই চাপ সামলে লড়াকু সংগ্রহের ভিত গড়ে দলটি। ৩২ বলে ৬০ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন রাব্বি। তার বিদায়ে ভাঙে এই দুই ব্যাটারের ৭৬ রানের জুটি। এরপর আকবরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। ৩১ বলে ৩৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৭০ রানে থামে রাজশাহী।