বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে বিচরণক্ষেত্র হারাচ্ছে ভ্রমর

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পরাগবাহী অন্যতম কীট ভ্রমরের বিচরণক্ষেত্র সঙ্কুচিত হচ্ছে। পরাগায়নের জন্য দায়ী অন্যতম কীটটি ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ছাড়ছে। তবে শীতল জলবায়ুর কারণে খুব বেশি উত্তরে যেতে পারছে না। এ ছাড়া ভ্রমরের সংখ্যাও অনেক কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার একদল গবেষক এই দাবি করেছেন।
ভ্রমরের সংখ্যা হ্রাস এবং বিচরণক্ষেত্রে কমে যাওয়া নিয়ে গবেষণা করেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার একদল গবেষক। এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন গত সপ্তাহে ‘সায়েন্স’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
১৯০১ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত সংগৃহীত ৬৭টি ভ্রমর প্রজাতির তথ্য নিয়ে গবেষণা করা হয়। গবেষকরা বলেন, ইউরোপ ও আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে বিশাল এলাকাজুড়ে ভ্রমরের বিস্তার ছিল। ভ্রমরের বিচরণক্ষেত্র হারানোর পেছনে কীটনাশক অথবা আবাস হারানোর কোনো তথ্য পাননি গবেষকরা। তবে ১৯৭০ সাল থেকে নাটকীয়ভাবে উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে এর সম্পর্ক পাওয়া যায়।
কানাডার ওটোয়া ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী জেরেমি কার বলেন, ভ্রমরের বিচরণক্ষেত্রে সঙ্কুচিত হওয়ার কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি। শুধু বিচরণক্ষেত্রই নয় ভ্রমরের সংখ্যাও নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায়ও।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভ্রমরের সংখ্যা ও বিচরণক্ষেত্র কমে যাওয়ায় খাবার উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে ফসলের ওপর নির্ভরশীল অর্থনীতিও সংকটে পড়বে। কারণ ভ্রমর মানুষ ও প্রাণীর খাদ্য উৎপাদনকারী অনেক উদ্ভিদের পরাগায়ন ঘটায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লেইফ রিচার্ডসন বলেন, ব্লুবেরি, আপেল, কুমড়া, টমেটোসহ বিভিন্ন খাদ্যশষ্যের পরাগায়নের কাজ করে ভ্রমর। তাই ভ্রমরের সংখ্যা ও বিস্তার কমে সরাসরি এসব খাদ্যশষ্যের উৎপাদনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ওটোয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক জেরেমি কার ভ্রমর রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, নতুন এলাকায় খাপ খাইয়ে নেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে পরাগায়নের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই কীটকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতে পারে।