বিশ্বকবির শিলাইদহ
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহ। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরশেদপুর গ্রামে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী নামে পরিচিত। কুষ্টিয়া শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব। প্রায় ৩৩ বিঘা আয়তনের মূল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে আড়াই বিঘা জমিতে। ১৮টি কক্ষ নিয়ে তিনতলাবিশিষ্ট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ী।
কুষ্টিয়ার নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা কাহিনি। এ জেলায় একসময় পাট চাষ হতো বলে স্থানীয় কোষ্টা শব্দ থেকে কুষ্টিয়া নামকরণ হয়েছে। হ্যামিলটনের গেজেটে উল্লেখ আছে, স্থানীয় জনগণ একে কুষ্টি বলে ডাকত বলে নাম হয়েছে কুষ্টিয়া। অনেকের মতে, ফরাসি শব্দ ‘কুশতহ’ থেকে কুষ্টিয়ার নামকরণ হয়েছে। ‘কুশতহ’ শব্দের অর্থ ছাই দ্বীপ।
কথিত আছে, সম্রাট শাহজাহানের সময় কুষ্টি বন্দরকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া শহরের উৎপত্তি ঘটেছে। ১৯৫৮ সাল থেকেই শিলাইদহের কুঠিবাড়ী প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। বর্তমানে এটি শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। জাদুঘরটিতে স্থান পেয়েছে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন সময়ের ছবি, ব্যবহার্য জিনিস।
ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া
ঢাকা থেকে যেতে চাইলে বাস বা ট্রেনে দুভাবে যাওয়া যায়। বাসে গেলে নিউ এসবি সুপার ডিলাক্স, শ্যামলী, হানিফ বাসে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেটে নামতে হবে। বাসের ভাড়া ননএসি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং এসি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।
ট্রেনে যেতে হলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস অথবা চিত্রা এক্সপ্রেসে করে যেতে হবে। সকালে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও সন্ধ্যায় চিত্রা এক্সপ্রেস কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। ট্রেনে গেলে পোড়াদহ ও ভেড়ামারা স্টেশনে নামতে হবে। তারপর সিএনজি নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে যেতে হবে।
যাওয়ার উপায়
কুষ্টিয়া থেকে অটোরিকশা, ইজিবাইক বা অন্য পরিবহনে সহজেই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ীতে যাওয়া যায়।
সময়সূচি
গরমের সময় কুঠিবাড়ী জাদুঘর প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শীতকালে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত জাদুঘর সাময়িক বিরতিতে বন্ধ থাকে। সপ্তাহের প্রতি রোববার জাদুঘরটি বন্ধ থাকে এবং সোমবার দুপুর ২টা থেকে খোলা থাকে।
কোথায় থাকবেন
কুষ্টিয়া শহরের মধ্যে বেশ কিছু ভালো মানের আবাসিক হোটেল আছে। একটু ভালো মানের হোটেলের মধ্যে আছে হোটেল নুর ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল রিভার ভিউ।
কোথায় খাবেন
খাওয়া-দাওয়ার জন্য বেশ কিছু ভালো মানের রেস্টুরেন্ট আছে। জাহাঙ্গীর হোটেল, শিল্পী হোটেল বেশ ভালো। আর কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা ও কুলফি মালাই অবশ্যই খাবেন।