ছুটির দিনে
৬০০ টাকায় শ্রীমঙ্গলের রাবার বাগানে
সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশের সবুজে হারানোর মতো আনন্দ আর হয় না। শহুরে কোলাহল ছেড়ে, ধুলোবালি পেরিয়ে শ্রীমঙ্গলের রাবার বাগানে যখন পৌঁছবেন, তখন আর ফিরতে ইচ্ছা করবে না। এ যেন সবুজের সমুদ্র। সারি সারি রাবার গাছের ফাঁকফোকর গলে ক্ষণে ক্ষণে উঁকি দেবে সোনালি রৌদ্র। আলো-ছায়ার ঢাকা রাবার বনে ছিমছাম নীরবতা মনে প্রশান্তি আনে। চমৎকার রাবার বাগানটি দেখতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে শ্রীমঙ্গলে। আর খরচ মাত্র ৬০০ টাকা।
যা দেখবেন
যতদূর চোখ যায় সুউচ্চ বৃক্ষের সারি। ঠিক যেন স্কেল দিয়ে মেপে মেপে একই সমান্তরালে লাগানো গাছগুলো। এই রাবার বাগানে কাঁচা সবুজ রঙের পাতা। সুউচ্চ বৃক্ষের সারি। শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া সড়কের বিটিআর চা বাগানের একপাশে রাবার বাগান, অন্যপাশে চা বাগান । কোথাও দুই ধারে, আবার কোনো জায়গায় একধারে চা বাগান একধারে রাবার বাগানের হাজারও গাছ, এরই মাঝখানে সুবিশাল পথ। যেমন লাউয়াছড়া যেতে রাস্তার বাঁ পাশে রাবারের সারি সারি গাছও ডানপাশে চা বাগান। আবার কালিঘাট রোডে ফুলছড়া বাগানে যেতে রাস্তার দুপাশে পড়বে হাজার হাজার রাবার গাছ। যতদূর চোখ যায় শুধু গাছ আর গাছ। চারদিকে সবুজের সমারোহ। দেখলেই মন ভরে যায়। রাবার বাগানটির বৈশিষ্ট্য হলো এটি একেক ঋতুতে একেক রকম সাজে সজ্জিত হয়। শীতকালে গাছের সব পাতা ঝরে গিয়ে যেমন রিক্ত হয়, তেমনি বর্ষায় ফিরে পায় নতুন যৌবন। বিটিআরআই চা বাগান এলাকায় রাবার বাগানের পাশেই রয়েছে টি রিসোর্ট গেস্টহাউস। চারদিকে নানা রঙের ফুলের গাছ, তারই মাঝে বাংলো ভবন। রঙিন চালের ছাউনিতে গেস্টহাউসটি যেন প্রকৃতিরই একটি অংশ। বৃষ্টির দিনে মেলে বৃষ্টিবিলাসের সুযোগ। বাগানের প্রতিটি গাছের পাতা থেকে বৃষ্টি ঝরে পড়ার অপরূপ দৃশ্য যেমন উপভোগ করতে পারবেন, তেমনি টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার অপূর্ব আমেজও নিয়ে আসবে ভিন্ন মাত্রা। চা বাগানের ভেতরে সুবিশাল কারখানা, যেখানে রাবার শিট তৈরি করা হয়। সকালে দুধের মতো সাদা কাঁচা রাবার সংগ্রহ করে জমা করে রাখা হয় বড় বড় হাউসে। সেখান থেকে নানা প্রক্রিয়াজাতকরণ ও মেশিনের ব্যবহারের মাধ্যমে তৈরি করা হয় রাবার শিট। এই রাবার শিট শুকানো ও আগুনে তাপ দিয়ে লালচে ভাব না হওয়া পর্যন্ত তাপ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে প্রকৃতির কাছাকাছি চমৎকার কিছু সময় কাটাতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে শ্রীমঙ্গল।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাস অথবা আন্তঃনগর ট্রেনে শ্রীমঙ্গল যেতে পারেন। সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অনেক বাস পাবেন (হানিফ, শ্যামলী, ইউনিক ইত্যাদি)। ভাড়া ২৬৫-৫০০/- অথবা চাইলে সিলেট থেকেও যেতে পারেন শ্রীমঙ্গলে।