পূজার ছুটিতে
ঘুরে আসুন ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে
ঢাকার সবচেয়ে প্রাচীন মন্দির ঢাকেশ্বরী। ঢাকেশ্বরী নামটি এসেছে ঢাকার ঈশ্বরী বা ঢাকা শহরের রক্ষাকর্তী দেবী হতে। অনেকের মতে, ঢাকা শহরের নাম এই ঢাকেশ্বরী নাম থেকেই। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের স্থাপত্যরীতি, গঠনবিন্যাস, শিল্পচাতুর্য মন্দিরটির সামগ্রিক দৃশ্যকে মাধুর্যমণ্ডিত করে তুলেছে। আসছে পূজার ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে।
ইতিহাস
কিংবদন্তি অনুসারে, একবার রাজা বিজয় সেনের রানি গিয়েছিলেন লাঙ্গলবন্দে স্নানে। ফেরার পথে জন্মেছিল তার একটি পুত্রসন্তান, ইতিহাসে যিনি পরিচিত বল্লাল সেন নামে। বল্লাল সেন সিংহাসনে আরোহণের পর একবার স্বপ্নে দেখেছিলেন, এই জায়গায় ঢাকা অবস্থায় পড়ে আছেন দেবী। বল্লাল সেন দেবীকে উদ্ধার করে এই মন্দির স্থাপন করেন। আরেকটি কিংবদন্তি অনুযায়ী দক্ষ রাজের কন্যা সতী পতি নিন্দা সহ্য করতে না পেরে দেহ ত্যাগ করলে শোকে মুহ্যমান মহাদেব সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করে তখন বিশ্ব চরাচর ধ্বংসের উপক্রম হয়। তখন নারায়ণ সুদর্শন চক্র সহযোগে সতীর দেহ খণ্ড করতে থাকেন, এভাবে সতীর দেহ ৫১টি খণ্ডে পরিণত হয়ে পৃথিবীর নানাস্থানে পতিত হয়। এই প্রতিটি স্থানকে এক একটি সতী পীঠ বলে, সতীদেহের উজ্জ্বল কীরিটের ‘ডাক’ তথা উজ্জ্বল গয়নার অংশ বিশেষ এ স্থানে পতিত হলে এই স্থানের নাম হয় ঢাকা।
যা দেখবেন
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ঢোকার সময়েই আপনাকে স্বাগত জানাবে একটি রাজফটক। রাজদরবারের মতো উঁচু আর প্রশস্ত ফটকটি মনে হবে যেন দুই হাত বাড়িয়ে আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। ঢোকার পরেই হাতের ডানদিকে পাবেন ঢাকেশ্বরীর মূল মন্দির। এই মন্দিরের মূল ফটক দুটি। তবে সাধারণত বেশির ভাগ মানুষ মাঝখানের গেটটি দিয়েই মন্দিরে প্রবেশ করে। গেটটি দিয়ে প্রবেশ করলেই আপনি পা রাখবেন নাটমন্দিরে। নাটমন্দিরের সোজাসুজি দেখতে পাবেন দুর্গা দেবীর প্রতিমা। নানা রকম অলংকারে সুসজ্জিত প্রতিমা আর দেবীর মুখ দেখলে নিমেষেই মুক্তি পেয়ে যাবেন সব মানসিক চাপ থেকে আর পাবেন সব বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার আত্মবিশ্বাস। ঢাকেশ্বরীর সৌন্দর্যে অন্য মাত্রা যোগ করেছে ঢাকেশ্বরীর পুকুর। পরিচ্ছন্ন এই পুকুরটিতে দর্শনার্থী বা ভক্তরা ভোগ দিয়ে থাকেন। পুকুরটির চারপাশ বাঁধাই করা। পুকুরে ছোট-বড় কিছু মাছও রয়েছে।
কীভাবে যাবেন
রিকশা, বাস অথবা সিএনজি যেকোনো একটাতে চড়েই যেতে পারেন ঢাকেশ্বরী মন্দির। মিরপুর থেকে বিকল্প বা সেফটি পরিবহনে করে সরাসরি যেতে পারবেন ঢাকেশ্বরীতে। তা ছাড়া মতিঝিল থেকেও যেতে পারবেন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। ভাড়া ২৫ থেকে ৫০ টাকা। এ ছাড়া যাঁরা শাহবাগ, গুলিস্তান এসব জায়গা থেকে যাবেন, তাঁরা রিকশায় করেই যেতে পারেন। ভাড়া দরদাম করে নেওয়াই ভালো।