খারদুংলার পথে
মেঘের বাড়ি রোথাংপাস
(বাংলাদেশের খুলনার মেয়ে জিনিয়া তাবাসসুম। ভারতের হিমাচল প্রদেশের মানালি থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের লেহ পেরিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যান চলাচলের রাস্তা খারদুংলা ঘুরে এসেছেন তিনি। আর দেশের প্রথম নারী সাইক্লিস্ট হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন জিনিয়া। একজন নারী সাইক্লিস্ট হিসেবে খারদুংলা জয়ের গল্প থাকছে ধারাবাহিকভাবে।–বিভাগীয় সম্পাদক)
প্রথম পাস সামিটে পৌঁছানোর দিন ঠান্ডা এতটাই ছিল যে আবহাওয়া উপযোগী কাপড় থাকার পরও ঠান্ডা আর জ্বরে পড়তে হলো। এই জ্বর আর ঠান্ডা নিয়ে পথ চলতে শুরু করলাম।
রোথাং পার করে আসার পর কিছুটা ডাউনহিল ছিল। সেখানেও সতর্ক থাকতে হয়েছে যেন ব্রেকপ্যাডের ক্ষতি না হয়। আমার ছিল ভি-ব্রেক, তাই একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয়েছিল। প্রথম দিন মারহি থাকার পর দ্বিতীয় দিন রোথাং পার করে আরো কিছুটা এগিয়ে আসতে হলো, কারণ এর মধ্যে থাকার কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
পাহাড়ি রাস্তা পার করে চলছি। আস্তে আস্তে মনে হচ্ছে, সবুজ রঙের কমতি। ঝরনার বয়ে চলা পানির শব্দ মাঝেমধ্যে কানে বাজছে। আর সন্ধ্যা নামতে নামতে বয়ে চলা নদীর পানি যেন ভারী হতে থাকে, সঙ্গে পানির শব্দটাও। আবার দূরে দেখতে পাচ্ছি বরফরাশি। এসব দেখতে দেখতে সময় পেরিয়ে চলে। মুগ্ধ হয়ে দেখি প্রকৃতির খেলা। বিকেলের দিকে একটা গ্রামে পৌঁছালাম। গ্রামটির নাম দেখলাম শিশু। ওখানে রাতে থাকার ব্যবস্থা করলাম আমরা। শান্ত নিরিবিলি একটা গ্রাম। সুন্দর সুন্দর বাড়ি ছিল। কয়েকটা খাবার দোকান। তবে এসব দোকান আগে থেকে অর্ডার না করলে খাবার মেলে না।
একটা দোকানে খাবার অর্ডার করে নিজে ফ্রেশ হয়ে ঘুরে দেখতে শুরু করলাম গ্রামটা। সারা দিনের ক্লান্তির সঙ্গে মনে হচ্ছিল পেটে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে। একটা ঝরনা চোখে পড়ল, এত সুন্দর দেখতেই থাকলাম। হোটেলের এক ভদ্রলোকের ডাকে আমার ঘোর কাটল। গরম গরম খাবার। খাবারের মধ্যে ম্যাগি নুডলসের স্যুপ আর চা।