পর্তুগালের পোর্টো শহরে আছে অন্য আকর্ষণ
পর্যটকদের কাছে পর্তুগালের পোর্টো শহরের আকর্ষণ বেড়েই চলেছে৷ বিশ্ববিখ্যাত পোর্ট প্রাচীন ও আধুনিক স্থাপত্যের অনেক নিদর্শন রয়েছে৷
পর্তুগালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হিসেবে পোর্টো বিশ্ববিখ্যাত পোর্ট ওয়াইন এবং ছবির মতো নিসর্গের জন্য পরিচিত৷ কিন্তু শহরটির আরও কিছু আকর্ষণ রয়েছে৷ সেখানে ঐতিহাসিক স্থাপত্য থেকে শুরু করে আধুনিক শিল্পের অনেক নিদর্শনের দেখা মেলে৷ পর্তুগালের সুস্বাদু খাবার চেখে দেখার সুযোগ তো রয়েছেই৷
হাতে একটি মাত্র দিন থাকলে পোর্টো শহরে কী দেখা উচিত? শহর সম্পর্কে একটা সার্বিক ধারণা পেতে হলে ‘টেলেফেরিকো দে গাইয়া’ নামের কেবেল কারে চাপা উচিত৷ দুরশ্ নদীর তীর থেকে রওয়ানা হয়ে অসাধারণ দৃশ্য চোখে পড়বে৷
উপরে পৌঁছানোর পর ‘পন্টে দো লুইশ প্রিমেইরু’ সেতুর উপর দিয়ে পোর্টোর প্রাচীন অংশে যাওয়া যায়৷ সেখানে কোন খাবার চেখে দেখা উচিত? অবশ্যই পর্তুগালের ঐতিহ্যগত মিষ্টি ‘পাস্তেইশ দে নাটা’৷ মান্টেইগারিয়া নামের দোকানে গেলে সেই মচমচে মিষ্টি তৈরির প্রক্রিয়াও দেখা যায়৷ দোকানের কর্মচারী ইসাবেল মোটা বলেন, ‘‘আমাদের কোনো রহস্য নেই৷ একেবারে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে এই মিষ্টি বেক করা হয়৷ দুধ, ময়দা, ডিম, চিনি, অল্প লেবুর রস আর অনেক ভালোবাসা৷’’03:43
ওভেনে পাস্তেইশ প্রস্তুত হয়ে গেলে গোটা পাড়া সেই খবর পেয়ে যায়৷ ঐতিহ্য অনুযায়ী ঘণ্টা বাজিয়ে মানুষকে ডেকে পর্তুগালের সবচেয়ে বিখ্যাত খাদ্যটি গরম অবস্থায় খাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়৷
পোর্টো শহরে আরও অনেক দ্রষ্টব্য রয়েছে৷ ‘ফুন্ডাসাঁউ দে সেরালভিশ’ নামের মিউজিয়াম পর্তুগালের সমসাময়িক শিল্পের সেরা সংগ্রহ হিসেবে পরিচিত৷ পর্তুগালের বিখ্যাত স্থপতি ও পোর্টোর সন্তান আলভারো সিসা ভিয়েরা ভবনটি ডিজাইন করেছেন৷ মিউজিয়ামের প্রদর্শনীগুলি সত্যি দেখার মতো৷ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি আন্তোনিউ প্রেটো বলেন, ‘‘ফাউন্ডেশন ও মিউজিয়ামে পর্তুগিজ ও আন্তর্জাতিক শিল্পের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে৷ আধুনিক পর্তুগিজ শিল্পকীর্তিগুলিকে আন্তর্জাতিক শিল্পের সান্নিধ্যে আনাও মিউজিয়ামের অন্যতম দায়িত্ব৷ বিশেষ করে ষাটের দশক থেকে যে সব শিল্প সৃষ্টি হয়েছে৷ একই ছাদের নীচে শিল্প, পরিবেশ ও স্থাপত্যের মধ্যে মেলবন্ধন আমাদের কাম্য৷’’
৩০ বছরেরও আগে গঠিত সেরালভিশ ফাউন্ডেশনের আওতায় শুধু সমসাময়িক শিল্পের মিউজিয়ামই নেই, বেশ কয়েক হেক্টর জুড়ে বিশাল এক পার্কও রয়েছে৷ সেখানেও বিশাল মাপের আধুনিক শিল্পকীর্তি শোভা পাচ্ছে৷ শান্তিতে হেঁটে বেড়ানোর সুযোগও রয়েছে৷
আবার পোর্টো শহরের প্রাচীন অংশে ফেরা যাক৷ দিনের শেষে ‘পার্কে দাস ভির্টুডেস’-এ ঢুঁ মেরে শীতল পানীয় হাতে সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করার মজাই আলাদা!