অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে আহতের খবর মিথ্যা, সুস্থ আছি : ভিডিওতে বারাদার
আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত উপপ্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, তালেবানের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং তাঁর আহত হওয়া নিয়ে যে খবর প্রচার করা হচ্ছে তা সত্য নয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তালেবানের দোহারে রাজনৈতিক কার্যালয়ের টুইটারে প্রকাশিত এক ভিডিওতে মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার বলেন, ‘এসব সত্য নয়। আমি ঠিক আছি ও সুস্থ আছি। গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে—তালেবানের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। এটা সত্য নয়। আমাদের মধ্যে তেমন কিছু নেই।’
‘উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই’, যোগ করেন মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার।
টুইটারে প্রকাশিত খুদে ভিডিওটিতে দেখা যায়, মোল্লা বারাদার আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল আরটিএ’র মাইক্রোফোন থাকা একজন সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর পাশে সোফায় বসে আছেন।
এ ছাড়া গতকাল বুধবার তালেবানের নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিন হাক্কানির ছোট ভাই আনাস হাক্কানিও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথা অস্বীকার করে টুইটারে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
এর আগে গতকাল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল—আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান সরকারের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদারের সঙ্গে একজন মন্ত্রীর তর্কবিতর্ক হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ তালেবান নেতাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, নতুন সরকারের পদ-বন্টন নিয়ে এই বাগ্বিতণ্ডার অবতারণা।
মোল্লা বারাদারকে কয়েক দিন ধরে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। তালেবান নেতৃত্বের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টির গুঞ্জন ছড়িয়েছে সংবাদমাধ্যমে। যদিও এসব নাকচ করে দিয়েছে তালেবান।
তালেবানের একটি সূত্র ‘বিবিসি পশতু’কে বলেছেন, মোল্লা বারাদার এবং নতুন সরকারের শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রী ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের অন্যতম নেতা খলিল উর-রহমান হাক্কানির মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়েছে। এ সময় দুইপক্ষেরই সঙ্গীরাও তর্কবিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন।
বিবিসি জানায়, কাতারে অবস্থানরত তালেবানের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য জানিয়েছেন, গত সপ্তাহের শেষের দিকে বচসার ঘটনা ঘটে।
বিবিসির সূত্রগুলো বলছে, ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লা বারাদার অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাঠামো নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় জোর দেওয়ার পক্ষে।
অন্যদিকে, তালেবানেরই একজন্য জ্যেষ্ঠ নেতার পরিচালিত হাক্কানি গ্রুপের নেতাদের অবস্থান হচ্ছে, বিজয় অজন সম্ভব হয়েছে শুধু লড়াইয়ের মাধ্যমেই।
মোল্লা বারাদারই প্রথম তালেবান নেতা যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছেন। ২০২০ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন তিনি। তার আগে তালেবানের পক্ষে হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহারের চুক্তিতে সাক্ষর করেন মোল্লা বারাদার।
তালেবানের সূত্রের বরাতে বিবিসি বলছে, মোল্লা বারাদার এই বাগ্বিতণ্ডার ঘটনার পরই রাজধানী কাবুল ছেড়ে কান্দাহারে গিয়েছেন। সোমবার এক অডিওবার্তায় তালেবানের এই নেতা বলেছেন, ভ্রমণে রয়েছেন তিনি। অডিওতে মোল্লা বারাদার বলেন, ‘আমি যেখানেই আছি, আমরা ভালো আছি।’
তালেবান বলতে চাইছে, কোনো তর্কবিতর্কের ঘটনা ঘটেনি। সাম্প্রতিক বিবৃতি-বক্তব্যে সাংঘর্ষিক কথা বলা হয়েছে। একজন মুখপাত্র বলেছেন, মোল্লা বারাদার নিরাপদে রয়েছেন, তিনি কান্দাহারে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার সঙ্গে দেখা করতে কান্দাহার গেছেন। পরে বিবিসি পশতুকে তিনি বলেন, মোল্লা বারাদার ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হওয়ায় তিনি বিশ্রামে গেছেন।