উইঘুরে গণহত্যার অভিযোগ তদন্ত করবে ব্রিটিশ ট্রাইব্যুনাল
স্বায়ত্তশাসিত জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীন সরকারের করা নির্যাতন গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধ কি না, তা খতিয়ে দেখতে লন্ডনে একটি স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল আগামী বছরের শুনানিতে নতুন প্রমাণ এবং সাক্ষ্য প্রকাশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ফোর্বস এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে স্বাধীন ট্রাইব্যুনালের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের প্রখ্যাত ব্যারিস্টার জিওফ্রে নাইস। এর আগে তিনি বলকান যুদ্ধ নিয়ে স্লোবোদান মিলোসেভিচের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করেছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতেও কাজ করেছেন। তিনিই ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসকে উইঘুর জনগণের বিরুদ্ধে ‘নৃশংসতা ও সম্ভাব্য গণহত্যা’ তদন্ত করতে বলেছিলেন।
নাইস বলেন, সম্ভাব্য গণহত্যার বিষয়ে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এমন প্রশ্ন তাদের জিজ্ঞাসা করা উচিত এবং তাদের উত্তর দেওয়া উচিত। তবে এ ধরনের দাবি কখনো জনসমক্ষে আইনিভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়নি।
স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল গঠনের আয়োজকরা প্রমাণ সংগ্রহের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আগামী কয়েক মাস বিদেশে নির্বাসিত উইঘুরদের কাছ থেকে প্রচুর তথ্য পাওয়ার প্রত্যাশা করছে। প্রমাণগুলোর মধ্যে জিনজিয়াংয়ের বন্দিশিবিরে জড়িত বেশ কয়েকজন সবেক নিরাপত্তারক্ষীর সাক্ষ্যও থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ঘটনা নিয়ে লন্ডনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসকে মন্তব্য করার জন্য এপির পক্ষ থেকে ই-মেইল করা হলেও কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে সম্প্রতি লন্ডনে জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে চীনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তিব্বতি ও উইঘুর সম্প্রদায়ের সদস্যরা। তিব্বত ও পূর্ব তুর্কিস্তানে চীনের ‘মানবতাবিরোধী জঘন্যতম অপরাধ’-এর নবম বার্ষিকী উপলক্ষে এই বিক্ষোভ করা হয়।
গত ২৯ আগস্ট যুক্তরাজ্যের তিব্বতি কমিউনিটি, ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস (ডব্লিউইউসি) এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর তিব্বত ও নির্যাতিত সংখ্যালঘুরের (জিএটিপিএম) নেতৃত্বে এই প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীদের হাতে ‘তিব্বত ও পূর্ব তুর্কিস্তানের বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক’, ‘উইঘুর মানুষদের বাঁচান’, ‘অভ্যন্তরীণ ক্যাম্পগুলোকে না বলুন’ ইত্যাদি স্লোগানসংবলিত ব্যানার দেখা যায়।
উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীন সরকার অমানবিক নির্যাতন ও নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। মুসলিমদের সংখ্যা কমানোর জন্য নারীদের জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো, জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাওয়ানো, পবিত্র কোরআন নিষিদ্ধ করা, ধর্মান্তরিত করা, নারীদের ধর্ষণ, বন্দিশিবিরে আটকে রেখে নির্যাতন করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে চীন সরকার প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে।