এবার শার্লি হেবদোতে এরদোয়ানের কার্টুন
বিতর্কিত কার্টুন নিয়ে ফ্রান্স ও তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মধ্যে বাগ্যুদ্ধের মধ্যেই ফরাসি ব্যঙ্গাত্মক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন শার্লি হেবদো এবার প্রকাশ করেছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের কার্টুন। সংবাদ সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বনাম তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মধ্যকার প্রবল বিরোধের মধ্যেই শার্লি হেবদো ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ কার্টুন এরদোয়ানকে নিয়ে। মহানবী (সা.)-এর কার্টুন প্রকাশ করে শার্লি হেবদো ম্যাগাজিন ২০১২ সালে বিতর্কের ঝড় তুলেছিল। এর জের ধরে চরমপন্থিরা ২০১৫ সালে শার্লি হেবদোর কার্যালয় আক্রমণ করে অন্তত ১২ জনকে হত্যা করেছিল। সেই কার্টুন দেখিয়ে সম্প্রতি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাখ্যা করতে গিয়েছিলেন ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি। তাঁকেও হত্যা করেছে ১৯ বছর বয়সী এক চেচেন যুবক।
এরপর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জানিয়েছিলেন, তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে। এ অবস্থান থেকে পিছিয়ে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে ছিল, ম্যাক্রোঁ ইসলামকে অপমান করতে পারেন না। ম্যাক্রোঁকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে এরদোয়ান আহ্বান জানান, কেউ যেন ফরাসি পণ্য না কেনে। এরপর আরব দুনিয়ার অনেক দেশই ফরাসি জিনিস বয়কট করেছে।
শার্লি হেবদোর কার্টুনের বিষয় এবার—এরদোয়ান এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। এই কার্টুন নিয়ে ডাচ দক্ষিণপন্থি রাজনীতিবিদ উইল্ডার্সের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন এরদোয়ান। তুরস্কে এ ধরনের অপরাধে দুই বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। গত শনিবার ও সোমবার উইল্ডার্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি কার্টুন শেয়ার করেছিলেন। একটিতে দেখা যায়, এরদোয়ান বোমার মতো একটি টুপি পরে আছেন। তার নিচে লেখা ‘সন্ত্রাসবাদী’। অন্যটিতে তুরস্কের পতাকা নিয়ে ডুবন্ত জাহাজের ছবি। তার ক্যাপশন হলো, ‘বাই বাই এরদোয়ান, তুরস্ককে ন্যাটো থেকে বের করে দেওয়া হোক।’
এদিকে ম্যাক্রোঁ বনাম এরদোয়ানের লড়াই শুধু কার্টুন বা একে অন্যের বিরুদ্ধে তর্কযুদ্ধে সীমাবদ্ধ নেই। ফ্রান্স ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানিয়েছে, তুরস্কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, এরদোয়ান ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন। এরদোয়ান ম্যাক্রোঁর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁকে অপমান করেছেন।
ফ্রান্সের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, ফ্রান্স ঐক্যবদ্ধ, ইউরোপও তাই। ইউরোপীয় কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠকে ক্ষমতার ভারসাম্যকে আরো শক্তিশালী করার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তুরস্ক যাতে ইউরোপীয় মূল্যবোধ ও স্বার্থ মেনে চলে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ছাড়া তুরস্কের পার্লামেন্টে ম্যাক্রোঁর বিবৃতির তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। চারটি প্রধান রাজনৈতিক দল একযোগে জানিয়েছে, ম্যাক্রোঁ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে যা বলেছেন, তাতে প্রবল বিরোধ দেখা দিতে পারে। তার প্রভাব সব ধর্মের লোকেদের ওপর পড়বে।