ওমিক্রন ও ডেলটায় সুনামির মতো কোভিড সংক্রমণ, উদ্বিগ্ন ডব্লিউএইচও
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বলেছেন—ডেলটা ও ওমিক্রন ভেরিয়্যান্ট মিলে কোভিড-১৯ সংক্রমণের বিপজ্জনক সুনামি বইয়ে দিচ্ছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গতকাল বুধবার বলেছে—ডেলটা ও ওমিক্রনের প্রকোপে রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণ হতে পারে। এর প্রভাবে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে। সংস্থাটি বলছে—ওমিক্রন ও ডেলটা কোভিড-১৯ আছড়ে পড়তে পারে সুনামির মতো। গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। বুধবার সতর্কবার্তায় এমন কথাই জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে, ওমিক্রন অতিমাত্রায় সংক্রামক হওয়ায় এবং ডেলটার সংক্রমণের সময়েই ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়াটা আক্রান্তের সংখ্যার সুনামির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে স্বাস্থ্যকর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বাড়ছে চাপ। করোনার দুই ধরনের জন্য বিশ্বব্যাপী মৃত্যুও বেড়েছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আরও বলেন, ‘নতুন কোভিড রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপুল স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে অসুস্থ হয়ে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। যারা টিকা পায়নি, তাদের সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুর ঝুঁকিও অনেক বেশি।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা গোটা বিশ্বে বেড়ে গেছে প্রায় ১১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে ও ফ্রান্সে গতকাল বুধবার করোনায় রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ ছাড়া বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রতিদিন গড়ে নয় লাখ নতুন সংক্রমণের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, হয়তো আগামী বছর করোনার তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে। তবে, সবটাই নির্ভর করছে টিকা কতজনকে দেওয়া হচ্ছে, তার ওপর। ডব্লিউএইচও চাইছে, প্রত্যেক দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ যেন পুরোপুরি টিকা পান। ২০২২ সালের মাঝামাঝি এ সংখ্যা যেন ৭০ শতাংশ হতে পারে।
জাতিসংঘ প্রকাশিত সাপ্তাহিক মহামারি সংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ লাখ নতুন করোনা কেস বা রোগী পাওয়া গেছে। ইউরোপেও আগের সপ্তাহের তুলনায় তিন শতাংশ করোনায় আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি এক লাখের মধ্যে ৩০৪ জন করে নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। যা যেকোনো অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার।
এ ছাড়া ডব্লিউএইচও বলছে—যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্তের হার ৩৯ শতাংশ বেড়ে গেছে। আফ্রিকাতেও নতুন আক্রান্ত প্রায় সাত শতাংশ বেড়ে দুই লাখ ৭৫ হাজার হয়েছে। ওমিক্রন বৃদ্ধি পাওয়াতেই সংক্রমণ এমন বেড়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তবে, গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃত্যু কমেছে প্রায় চার শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপ। বছর শেষে ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।