করোনাভাইরাসের উৎস প্রাকৃতিক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, উহানের ভাইরোলজি ল্যাবরেটরি থেকেই লিক হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। ট্রাম্পের এই দাবির একদিন পরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তাদের বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, নতুন করোনাভাইরাস ল্যাবে নয় ‘প্রাকৃতিক উৎস’ (ন্যাচারাল অরিজিন) থেকে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়েছে। গত বছরের শেষের দিকে প্রথমে উহানে বন্যপ্রাণীর মাংস বিক্রির মাধ্যমে মানুষের শরীরে এই ভাইরাস প্রবেশ করে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার দাবি করেন, তিনি প্রমাণ দেখতে পেয়েছেন যে, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পরার উৎস উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি, এখান থেকেই এটি ছড়িয়েছে। তবে তিনি এ বিষয় বিস্তারিত তথ্য দিতে সম্মত হননি। এর জন্য চীনকে বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণও দিতে হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের সেই বক্তব্যের পরই মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছিল। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এক বিবৃতিতে আমেরিকার ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, দেশের পুরো গোয়েন্দা বিভাগ পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে। বিজ্ঞানসম্মতভাবে ভাইরাসটি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার পর জানা গেছে কভিড-১৯ মানুষের তৈরি নয় বা জিনগত ভাবে কোনো পরিবর্তন ঘটানো হয়নি।
এর একদিন বাদেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকেও বক্তব্য এলো। শুক্রবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচওর ইমার্জেন্সি প্রধান মাইকেল রায়ান জোর দিয়ে বলেন, ‘জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক বিজ্ঞানীর কাছ থেকে ভাইরাসটি সম্পর্কে বারংবার শুনেছেন, এসব বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির ওপর নজর রেখেছেন।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করে রায়ান বলেন, ‘আমরা আশ্বস্ত করছি যে, ভাইরাসটির উৎস প্রাকৃতিক।’
ডব্লিউএইচও শুক্রবার এর আগে ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে চীনের তদন্তকারীদের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।
করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর পর পরই জল্পনা ছড়ায় ভাইরাসটি মানুষের তৈরি। গত ৮ এপ্রিল প্রকাশিত পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২৯ শতাংশ মার্কিন নাগরিক বিশ্বাস করেন ভাইরাসটি ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেই দাবির পক্ষে জোরালো কোনো প্রমাণ এখনো পর্যন্ত মেলেনি।
ডব্লিউএইচওর ইমার্জেন্সি প্রধান মাইকেল রায়ান এদিন আরো বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ হলো, ভাইরাসটির উৎস যে প্রাকৃতিক সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। এখন আমাদের বোঝা দরকার, ভাইরাসটি কিভাবে অ্যানিম্যাল-হিউম্যান প্রজাতির বাধাগুলো ভেঙে ফেলেছে।’