করোনার উৎস খুঁজতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র
নভেল করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালিত পরবর্তী অনুসন্ধান ও গবেষণায় সহযোগিতার কথা জানিয়েছে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়া ‘যথাসময়ে, স্বচ্ছ ও প্রমাণভিত্তিক’ করতে গত বৃহস্পতিবার সহযোগিতার কথা জানায় দেশ দুটি। সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গ্রুপ অব সেভেন (জি৭) সম্মেলন উপলক্ষে যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার আহ্বানের পর করোনার উৎস খুঁজতে নতুনভাবে অনুসন্ধান চালানোর বিষয়টি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। মহামারি এই ভাইরাসের প্রকৃত উৎস কী, তা এখনও জানা যায়নি। দেড় বছর ধরে বিষয়টি রহস্যে ঘেরা। তবে কোনো কোনো বিজ্ঞানী, গবেষক বা দেশ এজন্য চীনকে দায়ী করে। তাদের ভাষ্য, উহানে চীনের ল্যাব থেকেই করোনার উৎপত্তি। তবে এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে আসছে চীন। চীন বলছে, করোনাভাইরাস কোনো ল্যাব থেকে ছড়ায়নি। এটি ছড়িয়েছে প্রাকৃতিকভাবে বাদুড় থেকে।
করোনার উৎপত্তি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনে তার তদন্ত দল পাঠায়। তবে, প্রথম দিকে এ ব্যাপারে তথ্য দিতে অসহযোগিতার অভিযোগ ওঠে চীনের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন দেশ ও বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিয়ে পুনরায় অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনার কথা জানিয়েছেন।
জো বাইডেন ও বরিস জনসন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘করোনার উৎপত্তি খুঁজতে চীনসহ অন্যান্য স্থানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরবর্তী সময়োচিত, স্বচ্ছ ও প্রমাণভিত্তিক অনুসন্ধান পরিচালনায় সহযোগিতা করব।’
যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, বাইডেন ও জনসন পরস্পর একটি বৈশ্বিক লক্ষ্য নির্ধারণ করেন। তাঁরা গণতন্ত্র-মানবাধিকার, প্রতিরক্ষা-নিরাপত্তা, বিজ্ঞান ও আবিষ্কার এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে পরস্পর একসঙ্গে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্রের ক্ষতি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাইডেন ও জনসন জানান, বর্তমান মহামারি মোকাবিলা করে ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক প্রস্ততি নিতে তাঁরা একত্রে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া কোভিড মহামারির বিভিন্ন ভ্যারিয়্যান্ট মোকাবিলা ও উদ্ভূত সংক্রামক রোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় দুটি দেশ এক সঙ্গে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তাঁরা বলেন, ‘মহামারি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন তৈরি, নিরাপদে সংরক্ষণ ও ভ্যাকসিনের জন্য যেসব উপাদান দরকার, তা সরবরাহে একসঙ্গে কাজ করব। সময়মতো ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ততা, মূল উপাদান ও সরঞ্জাম বৃদ্ধি করব। রপ্তানি সীমাবদ্ধতা ও অন্যান্য সমস্যা দূর করে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াব।’
যৌথ বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের মে মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং সমমনা দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করবে। বাইডেন ও জনসন স্বাস্থ্য ছাড়াও বাণিজ্য, জলবায়ু, বিজ্ঞান ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বাইডেন ও জনসন ন্যাটোকে শক্তিশালী ও আধুনিক করতে এবং এর তহবিল বৃদ্ধি করতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হন।