ট্রাম্প নয়, সিংহভাগ ভারতীয়-মার্কিনি ভোট দিতে পারেন জো বাইডেনকে
আগামী ৩ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট। তার আগে গতকাল বুধবার প্রকাশিত ইন্ডিয়ান আমেরিকান অ্যাটিটিউড সার্ভে বা আইএএএসের প্রতিবেদনে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়তে পারে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কপালে।
আইএএএসের সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৭২ শতাংশ ভারতীয়-মার্কিনি ভোটার তাঁদের সমর্থন দিতে পারেন ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনকে। আর ভারতীয়-আমেরিকানদের মাত্র ২২ শতাংশ ভোট পেতে পারেন ট্রাম্পকে। সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ৯৩৬ জনের ওপর সমীক্ষা চালায় আইএএএস। সেই প্রতিবেদন গতকাল প্রকাশিত হয়। তবে আইএএএস বলেছে, গত ১ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা এই সমীক্ষা চালিয়েছে। আইএএএসের বক্তব্য, ভোটের সময় এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে সমর্থনের শতাংশে পরিবর্তন হতে পারে। তবে সিংহভাগ ভারতীয়-মার্কিন নাগরিক যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন, এ ব্যাপারে কোনো সংশয় রাখেনি আইএএএস।
আইএএএসের সমীক্ষার বিস্তারিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয়-মার্কিনিদের কাছে দুদেশের সম্পর্কের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে। ট্রাম্পকে পছন্দ না করলেও শুধু তাঁকে ঠেকানোর জন্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নষ্ট হোক, চান না ভারতীয়-মার্কিনিরা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘গুড ফ্রেন্ড’, ‘গ্রেট লিডার’ বলে অতীতে একাধিকবার অভিহিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মাত্রই করোনা থেকে সেরে উঠেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তা ছাড়া কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ট্রাম্প সরকারের ভূমিকাও এবারের নির্বাচনে ইস্যু হতে যাচ্ছে বলে সমীক্ষায় বলা হয়েছে। যদিও ট্রাম্প আগেভাগেই বলে রেখেছেন, তিনি যদি না জিততে পারেন, তাহলে ধরে নিতে হবে ভোটে বড় ধরনের কারচুপি হয়েছে।
আইএএএসের সমীক্ষা প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারতীয়-আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসই জিততে যাচ্ছেন। ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কমলা হ্যারিস ট্রাম্পের কট্টর বিরোধী। কমলা হ্যারিসের মা ছিলেন দক্ষিণ ভারতীয় আর বাবা আফ্রিকান। কমলা হ্যারিস প্রথম শিরোনামে আসেন তাঁর মায়ের নামে ইডলি ও মসলা ধোসার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুইট করে।
আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, বিশ্বজুড়ে অতি ডানপন্থি শাসকদের জনপ্রিয়তা নিম্নমুখী। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জনসমর্থন কমছে। ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও একই চিত্র উঠে এসেছে সমীক্ষায়। গত নির্বাচনে যে ভারতীয়রা ট্রাম্পের সমর্থন দিয়েছিলেন, তাঁরাও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন। এর প্রভাব ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিতে পড়ে কিনা, সেটাই দেখার।
যুক্তরাষ্ট্রে ভোটের ক্ষেত্রে ভারতীয়রা দ্বিতীয় বৃহত্তম অভিবাসী। ফলে তাদের মতামত ভোটে বড় প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বৈদেশিক নীতিবিষয়ক থিঙ্কট্যাঙ্ক কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয়-আমেরিকান জনসংখ্যা ছিল ৪১ লাখ ৬০ হাজার, যাদের মধ্যে ২৬ লাখ ২০ হাজার নথিভুক্ত মার্কিন নাগরিক। তাদের মধ্যে ভোটার রয়েছেন ১৯ লাখ।