পুতিনের সমালোচনাকারীর ২৫ বছরের জেল
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ক্রেমলিনের সমালোচক ভ্লাদিমির কারা-মুর্জাকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মস্কোর একটি আদালত। আজ সোমবার (১৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রদোহী মামলায় মস্কোর একটি আদালত এ রায় দেয়। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন চালানোর পরে এই প্রথম কোনো সমালোচককে কঠোর সাজা দেওয়া হলো। তবে, নিজের বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুর্জা। খবর রয়টার্সের
তিন সন্তানের জনক ৪১ বছর বয়সী কারা-মুর্জা রাশিয়ার বিরোধীদলের অন্যতম এক নেতা। রাশিয়ার নাগরিকত্বের সঙ্গে সঙ্গে তিনি ব্রিটেনেরও পাসপোর্টধারী। দীর্ঘ সময় ধরে পুতিনের সমালোচনা করে আসছেন মুর্জা। একইসঙ্গে রাশিয়ার মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে রুশ ব্যক্তি ও সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পশ্চিমাদের সঙ্গে লবিং করতেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, কারা-মুর্জার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহিতা ও রাশিয়ান সামরিক বাহিনীকে অসম্মান করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের শুরু থেকে এর বিরোধিতা ও সমালোচনা করে আসছিলেন তিনি। রাষ্ট্রীয় আইনজীবীরা শুনানির সময় মুর্জার সর্বনিম্ন ২৫ বছরের কারাদণ্ড চেয়েছিলেন।
গত বছর মস্কোতে আটক পুতিনের এই সমালোচক। আটক হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে একটি সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সাক্ষাৎকারে মুর্জা অভিযোগ করে বলেছিলেন, রাশিয়া হত্যাকারীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। একইসঙ্গে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনে বোমা হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের হত্যা করছে রুশ বাহিনী। তবে, এই অভিযোগ বার বার অস্বীকার করছে মস্কো।
রায়ের সময় মুর্জার আদালতেই ছিলেন। ক্যাজুয়াল জ্যাকেট ও জিন্স প্যান্ট পরিহিত এই রুশ নাগিরিককে একটি কাচের রুমে রাখা হয়। রায়েল পর মুর্জা বলতে থাকেন, ‘রাশিয়া মুক্ত হবে।’ রুশ বিরোধীদলগুলোর স্লোগান এটি।
গত সপ্তাহে মুর্জার সর্বশেষ শুনানি হয়। এটি হয়েছিল বন্ধ দরজার পেছনে। শুনানির সময় আদালতে ক্ষমা চাননি মুর্জা। এমনকি, নিজের বলা কথায় অনড় ছিলেন তিনি। তার মতে, তিনি যেসব কথা বলেছিলেন সবগুলোই সত্য ও সঠিক।
মুর্জা আদালতে বলেন, ‘অপরাধীদের তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়ার কথা। অন্যদিকে, আমি আমার রাজনৈতিক মতামতের জন্য কারাগারে আছি। আমি জানি, একদিন আমাদের দেশের ওপর থেকে সব অন্ধকার কেটে যাবে।’
মুর্জার আইনজীবী মারিয়া এইসমন্ট বলেন, ‘রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব আমরা।’
পুতিন সমালোচকের জেল নিয়ে নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। লন্ডনে নিযুক্ত রুশ দূতকে তলব করেছে ব্রিটিশ সরকার। রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ রায় দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের।