প্যারিসে চাপাতির কোপে দুজন গুরুতর আহত, ‘সন্ত্রাসবাদী হামলা’ বলছে ফ্রান্স
পাঁচ বছর আগে প্যারিসের ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন ‘শার্লি হেবদো’ কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। এরপর ‘শার্লি হেবদো’ তাদের কার্যালয়ের স্থান পরিবর্তন করেছে। নতুন কার্যালয়ের ঠিকানা গোপন রাখা হয়েছে। শার্লি হেবদোর পুরোনো কার্যালয়ের বাইরে গতকাল শুক্রবার চাপাতি নিয়ে হামলা চালিয়েছে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্যারিসের মেয়রকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জাঁ কাসটেক্স। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
এ ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যা দিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন। তিনি বলেন, ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি হেবদোর পুরোনো কার্যালয়ের কাছাকাছি এলাকায় ঘটা হামলাটি ‘সুস্পষ্টভাবে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড। ইসলামী সন্ত্রাসবাদীরা এভাবে হামলা চালায়।’
হামলার ঘটনার পর ঘটনাস্থলের কাছাকাছি এলাকা থেকে ১৮ বছর বয়সী এক পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া আরো ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
হামলায় আহত দুজন নারী-পুরুষ একটি টেলিভিশন প্রোডাকশন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দুজনই গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ প্রথম জানিয়েছিল, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল দুজন। পরে জানানো হয়, তাদের একজন পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন জানিয়েছেন, এ হামলার ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন আটক পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কিশোর তিন বছর আগে ফ্রান্সে এসেছিল। ওই কিশোরের বিরুদ্ধে উগ্রবাদীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার পূর্ব কোনো অভিযোগ নেই। তবে এর আগে একবার তাকে স্ক্রু ড্রাইভার সঙ্গে রাখার অভিযোগে আটক করেছিল পুলিশ।
২০১৫ সালে শার্লি হেবদো ম্যাগাজিনে মহানবীর (সা.) কার্টুন ছাপা হয়। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে মুসলিমরা তীব্র নিন্দা জানান। এরপর শার্লি হেবদোর কার্যালয়ে হামলা করে জঙ্গিরা। হামলায় দুই বিখ্যাত কার্টুনিস্টসহ নিহত হন ১২ জন। পরে জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে। শার্লি হেবদো এরপর আবারও ওই বিতর্কিত কার্টুন ছাপে। আল-কায়েদাও আবার হামলার হুমকি দেয়।
শার্লি হেবদোর কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে এখনো ১৪ জনের বিচার চলছে। গত ২ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানির সময় এক অভিযুক্ত অসুস্থ হয়ে পড়ে। আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। পরে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। গতকাল শুক্রবার থেকে ওই মামলার বিচার আবার শুরু হয়েছে।