মসজিদে হামলার পর নিউজিল্যান্ডের জনগণের পরিবর্তন হয়েছে : জেসিন্ডা আরডার্ন
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, ‘ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় ৫১ জন নিহত হওয়ার পর থেকে দেশের মুসলমান সম্প্রদায়ের সঙ্গে কিউই জনগণ আরো বেশি সম্পৃক্ত হয়েছেন।’ এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডের জনগণ মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। গত বছরের ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন জেসিন্ডা আরডার্ন। তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের দিনটিকে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে অন্ধকার দিন হিসেবে অভিহিত করেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
দিনটি উপলক্ষে জেসিন্ডা ওই দুই মসজিদের সদস্যদের সঙ্গে একটি বিশেষ যৌথ প্রার্থনায় অংশ নেন। একটি জাতীয় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে আগামী রোববার তাঁর অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।
প্রার্থনা অনুষ্ঠানে হামলার সময় আল নূর মসজিদ থেকে ওই দিন বেঁচে ফেরা ফরিদ আহমেদও ছিলেন, যাঁর স্ত্রী হামলায় নিহত হন। তিনি বলেন, ‘যদি কারো মত ও বিশ্বাসের পার্থক্য থাকে, তবে সে ব্যাপারে আমাদের আলোচনা করা উচিত, একে অপরকে প্রশ্ন করা উচিত। তবে একে অপরকে ভয় পাওয়া উচিত নয়।’
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জানান, কিউই জনগণ তাঁকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা ওই হামলার পর প্রথমবারের মতো মসজিদে যান এবং বিশ্বাসের পার্থক্যের বিষয়ে আরো প্রকাশ্য আলোচনা করেন।
জেসিন্ডা বলেন, ‘ক বছর পর আমি বিশ্বাস করি, নিউজিল্যান্ডের জনগণ মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জটি নিশ্চিত করতে হবে দৈনন্দিন কাজকর্মে। আমরা বর্বরতা, হয়রানি, বর্ণবাদ, বৈষম্যমুক্ত একটি জাতি গড়ে তুলব।’
গত বছরের ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে শুক্রবারের জুমার নামাজের সময় প্রার্থনারত মুসল্লিদের ওপর ব্রেন্টন ট্যারেন্ট (২৯) নামে এক অস্ট্রেলিয়ার উগ্রবাদী শ্বেতাঙ্গ নির্বিচার গুলি চালায়। এতে পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
হামলার পরদিন ১৬ মার্চ ট্যারেন্টকে প্রথম আদালতের সামনে হাজির করা হয়। সে সময় তাকে গণমাধ্যমের দিকে তাকিয়ে অনেকবার হাসতে দেখা যায়। ট্যারেন্টের বিরুদ্ধে ৫১টি হত্যার অভিযোগ, ৪০টি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং সন্ত্রাস দমন আইনের অধীনে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। দোষী প্রমাণিত হলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হতে পারে।