মিয়ানমারে নিহত ৩০০ ছাড়াল, ৯০ শতাংশের মৃত্যু গুলিতে
জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৩০০ জনের বেশি আন্দোলনকারীকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন এবং তাঁদের এক-চতুর্থাংশের মাথায় গুলি করা হয়েছিল। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য জানিয়েছে।
মিয়ানমারের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসিসস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) তিন শতাধিক নিহতের কথা বললেও জান্তা কর্তৃপক্ষ বলছে, মোট নিহত হয়েছে ১৬৪ জন এবং এদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নয়জন সদস্য রয়েছে।
তবে উভয়পক্ষের দেওয়া তথ্যের কোনোটিই যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
এএপিপি বলছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) পর্যন্ত মিয়ানমারে বিক্ষোভ আন্দোলন চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩২০ জন নিহত হয়েছে এবং অন্তত তিন হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা ঘটেছে। নিহতদের ৯০ শতাংশ পুরুষ এবং অন্তত ৩৬ শতাংশের বয়স ২৪ বছর বা তার কম।
‘প্রতিদিন মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেই চলেছে’ বলে উল্লেখ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি।
এদিকে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মালিকানাধীন দুটি বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো- মিয়ানমার ইকোনোমিক কো-অপারেশন ও মিয়ানমার ইকোনোমিক হোল্ডিংস লিমিটেড।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুইটিকে কালো তালিকাভুক্তির পাশাপাশি ওই প্রতিষ্ঠান দুটির সম্পদ জব্দ করেছে। এ ছাড়া এই দুই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যবসায় জড়িত থাকলে তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছিল, বিক্ষোভকারীদের দমনে এই প্রতিষ্ঠান দুটি আর্থিকভাবে বিনিয়োগ করছিল।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে জান্তাবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ চলছে। সেনা অভ্যুত্থানের অবসান ও দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ সামরিক বাহিনীর হাতে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে রাজপথে রয়েছে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি সাধারণ জনগণ।