রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে উদ্বেগের কিছু নেই, জাতিসংঘকে বাংলাদেশ
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন জেনেভার জাতিসংঘ দপ্তরে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান। আজ বুধবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে গত তিন বছরেও রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হয়নি।
রাষ্ট্রদূত এ সময় রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। তিনি কক্সবাজারের সীমিত জায়াগায় বিপুল রোহিঙ্গার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান, জীবন-জীবিকার অনিশ্চয়তা, স্থানীয় আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত অবস্থার চরম বিপর্যয় এবং ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আরো উন্নত জীবনমান, জীবিকা ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ইচ্ছেয় ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের সন্তোষ প্রকাশের বিষয়টির প্রতিও হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ সরকার সম্পূর্ণ মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান করে। তিনি মিয়ানমারের রাখাইনে যথাযথ পরিবেশ তৈরি এবং রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এ সমস্যার টেকসই সমাধানে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।
এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো, আসিয়ান ও মিয়ানমারে বিনিয়োগকারীসহ সব দেশের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার এ সময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই এ সংকটের সমাধান করতে হবে বলে হাইকমিশনার একমত পোষণ করেন। এ লক্ষ্যে তিনি সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।