সন্ত্রাসী তালিকা থেকে নাম কাটাতে সুদানের কাছে অর্থ দাবি যুক্তরাষ্ট্রের
মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে সুদানকে সন্ত্রাসবাদে মদদদাতা দেশের তালিকা থেকে নাম সরানোর প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই তালিকা থেকে নাম কাটাতে সুদানের কাছে ৩৩ কোটি মার্কিন ডলার দাবি করেছে ট্রাম্প সরকার।
২২ বছর আগে আল-কায়েদার হামলায় ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য দারিদ্র্যপীড়িত আফ্রিকান দেশটির কাছে এ অর্থ দাবি করা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুদান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানায়, মঙ্গলবার সুদানের রাজধানী খার্তুম সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। দেশটির সাবেক শাসক ওমর আল-বশিরের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লা হামদকের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করেন পম্পেও। পাশাপাশি সুদানের নতুন সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
উত্তর কোরিয়া, ইরান ও সিরিয়ার সঙ্গে এ তালিকায় ১৯৯৩ সাল থেকে নাম রয়েছে সুদানের। এ কারণে সুদানের জন্য বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার জরুরি আর্থিক সহায়তা।
১৯৯৮ সালে তানজানিয়া ও কেনিয়ায় মার্কিন দূতাবাসে বোমা হামলা চালায় আল-কায়েদা। এতে অন্তত ২২৪ জন নিহত ও আহত হয় চার হাজারেরও বেশি মানুষ। পরে এ হামলায় তৎকালীন আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ায় সুদানকে দোষী সাব্যস্ত করে মার্কিন আদালত। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে ছিলেন লাদেন।
তবে সুদানের বর্তমান মন্ত্রিসভা, বিরোধী নেতাসহ সাধারণ জনগণ অতীত স্বৈরশাসকের কর্মকাণ্ডের দায়ে কোটি কোটি ডলার জরিমানা গোনার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া দূতাবাসে হামলার সময় দায়িত্বরত সুদানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হাসান আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, তাঁরা লাদেনকে আটক করে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন মার্কিন প্রশাসনই এতে রাজি হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বশির সরকারের কয়েক দশকের দুঃশাসন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং করোনাভাইরাসের কারণে পঙ্গু হয়ে পড়েছে সুদানের অর্থনীতি।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, সুদানের প্রায় এক কোটি মানুষ চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে। গত জুনে সেখানে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩০ শতাংশ।