সিনেটে অভিযোগ দাখিল, ট্রাম্পকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে সমর্থকদের হামলার ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহে উসকানির’ অভিযোগে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাস হওয়া অভিশংসনের প্রস্তাব কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে দাখিল করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
এই প্রথম সাবেক কোনো প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনে বিচার করতে যাচ্ছে সিনেট। তাছাড়া ট্রাম্পের আগে দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসনের মুখোমুখি হননি কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির নিয়োগ দেওয়া অভিশংসন ব্যবস্থাপকেরা সোমবার সন্ধ্যায় সিনেটে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনে জালিয়াতির ভুয়া দাবি এবং ইউএস ক্যাপিটলে হামলায় সমর্থকদের উসকানির অভিযোগ দাখিল করেন। ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান জেমি রাসকিন সিনেট ফ্লোরে অভিশংসন প্রস্তাব পাঠ করেন। অভিশংসন ব্যবস্থাপকেরা কালো মাস্ক পরে দুজন দুজন করে সিনেটে প্রবেশ করেন।
ট্রাম্পের অভিশংসন প্রসঙ্গে সোমবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সিএনএনকে বলেন, ‘আমি মনে করি, অভিশংসন অবশ্যম্ভাবী। এটা না ঘটলে বাজে প্রভাব রয়ে যাবে।’
তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে সিনেটে অভিশংসনের পক্ষে রায় মিলবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বাইডেন। এজন্য দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের জন্য অন্তত ১৭ জন রিপাবলিকানের ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার প্রয়োজন হবে। রিপাবলিকান সিনেটরদের অনেকের মানসিকতা বদলালেও এতটা বদলায়নি বলে জানান বাইডেন।
আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সিনেটে এর শুনানি শুরু হতে পারে। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারির আগে সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসনের বিচারকার্য শুরু না করতে একটি চুক্তিতে পৌঁছান মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানেরা। সে অনুযায়ী প্রস্তুতির সময় পাবেন ট্রাম্পের আইনজীবীরা।
শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককোনেলের আহ্বানে বিচার শুরুর আগে সময় বাড়াতে সম্মত হন শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সিনেটর চাক শুমার। পরে এক বিবৃতিতে মিচ ম্যাককোনেল বলেন, ৯ ফেব্রুয়ারি সিনেটে বিচারের শুনানি শুরু করা যেতে পারে।
গত ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে কংগ্রেস ভবনে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট গণনা ও বাইডেনের বিজয় প্রত্যয়নের অনুষ্ঠানে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। এতে এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন নিহত হন।
এ ঘটনায় ট্রাম্প উসকানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস। ভোটাভুটিতে তা পাস হয়। এরই মধ্যে ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হয়। এখন রীতি অনুযায়ী নিম্নকক্ষে পাস হওয়া অভিশংসনের বিচার হবে সিনেটে। ২০১৯ সালের শেষ দিকে প্রথমবার অভিশংসনের মুখোমুখি হন ট্রাম্প। সে যাত্রায় ডেমোক্র্যাট সংখ্যাগরিষ্ঠ হাউসে পাস হলেও রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটে গিয়ে নির্দোষ প্রমাণিত হন তিনি।
অভিশংসনের মূল উদ্দেশ্য থাকে ক্ষমতাচ্যুত করা। ট্রাম্প এমনিতেই ক্ষমতার বাইরে। ফলে সিনেটের বিচারে ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি পরবর্তীতে আর কখনো প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াতে পারবেন না। এর আগে ট্রাম্প ইঙ্গিতে জানিয়েছিলেন, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে পারেন তিনি।