সুদানে ব্যাপক সংঘর্ষ, প্রেসিডেন্ট প্যালেস-বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণের নেওয়ার দাবি
সুদানের রাজধানী খার্তুমে তুমুল গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও প্রধান আধাসামরিক বাহিনী দ্য র্যাপিড ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে এ সংঘর্ষ চলছে। এই সংঘর্ষে কে আগে হামলা করেছে, এ নিয়ে দুপক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছে। ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্টের প্যালেস, সামরিক বাহিনীর প্রধানের বাসভবন ও রাজধানীর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করছে আরএসএফ। আজ শনিবার (১৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
আরএসএফ বলছে, তাদের ওপর প্রথমে হামলা চালিয়েছিল সামরিক বাহিনী। এরপরেই দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের পর বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।
এদিকে, আরএসএফের বিরুদ্ধে সুদানের বিমান বাহিনী অভিযান শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। স্থানীয় গণমাধ্যম এ সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। ওসব ভিডিওতে দেখা যায়, খার্তুমের আকাশ সীমায় চক্কর দিচ্ছে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান। তবে, স্বাধীনভাবে এ তথ্য যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স বলছে, খার্তুমের বেশ কয়েকটি এলাকায় গোলাগুলি চলছে। এটি আশেপাশের শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে।
রয়টার্সের এক গণমাধ্যমকর্মী রাজধানী খার্তুমের রাস্তায় কামান এবং সাঁজোয়া যান মোতায়েন দেখেছেন। সেনাবাহিনী ও আরএসএফ উভয়ের সদরদপ্তরের কাছে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন।
স্থানীয় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আবাসিক এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অনেক বেসামরিক আহত হয়েছে।
এদিকে, সুদানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্প্রচার মাধ্যমের প্রধান কার্যালয়েও সংঘর্ষ হচ্ছে। সম্প্রচার মাধ্যমটির একজন উপস্থাপক টিভি স্ক্রিনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সুদানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, মিসর, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ। আফ্রিকার অন্যতম শক্তিশালী আরব রাষ্ট্র মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। আর সুদানে নিযুক্ত মার্কিন দূত জন গডফ্রে বলেন, ‘আমি ও আমার কর্মীরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছি। সম্মুখ লড়াইয়ে উত্তেজনা বাড়ছে, যা খুবই বিপজ্জনক। এ সংঘর্ষ থামাতে জ্যেষ্ঠ কাওকে এগিয়ে আসতে হবে।’
আর সুদানে থাকা ভারতীয়দের নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সুদানের সামরিক বাহিনী বলছে, বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে আরএসএফ। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে এ লড়াই। এতে করে গোটা দেশে নতুন করে যুদ্ধ লাগার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
এর আগে আরএসএফ প্রধান মোহাম্মেদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেতদি সামরিক বাহিনীর আক্রমণের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের একটি ক্যাম্প চারদিক থেকে ঘিরে ভারী অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ব্যাপক গুলি চালায় সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।
২০১৯ সালে আরএসএফ গঠন করে হেমেতদি। দাফুর সহিংসতায় যেসব আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছিল তাদের নিয়েই সশস্ত্র বাহিনীটিকে গড়ে তোলা হয়।