সাগরে অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর হাতে ১০ বাংলাদেশি আটক
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে নিউজিল্যান্ড যাওয়ার সময় ১০ বাংলাদেশিকে আটক করেছে অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী। ৬৫ জন অভিবাসী বোঝাই একটি নৌকাসহ তাদেরকে আটক করা হয়। বিবিসি জানিয়েছে এরই মধ্যে নৌকাটিকে অস্ট্রেলিয়ার জলসীমা থেকে ইন্দোনেশিয়ায় পাঠিয়ে দিয়েছে দেশটির নৌবাহিনী।
বিবিসি আরো জানিয়েছে, সর্বশেষ ইন্দোনেশিয়ার জলসীমা থেকে ৬৫ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়। তাদের এখন ইন্দোনেশিয়া ও তিমুর সীমান্তের কাছে কোপাং দ্বীপে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।
উদ্ধারপ্রাপ্ত এক বাংলাদেশি নাজমুল হাসান বিবিসিকে জানিয়েছেন, নিউজিল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হওয়ার উদ্দেশ্যে তারা এই বিপজ্জনক পথ বেছে নিয়েছিলেন।
নাজমুল হাসান জানান, নিউজিল্যান্ডের সরকার শরণার্থীদের অনেক সাহায্য সহযোগিতা দেয় এই খবর পেয়েই তারা সেদেশে পাড়ি জমাতে চেষ্টা করেছিলেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়াতেও গিয়েছিলেন সাগরপথে।
নাজমুল জানান, চট্টগ্রামে থেকে প্রথমে তিনি সমুদ্রপথে থাইল্যান্ড যান। তারপর মালয়েশিয়া এবং সবশেষে তাঁরা গিয়ে পৌঁছান ইন্দোনেশিয়ায়। ওই পথ পাড়ি দিতে তাঁদের তিন মাসের মতো সময় লেগেছিল।
নাজমুল বলেন, ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানোর পর তাঁরা জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার আশ্রয়ে ছিলেন এবং ইন্দোনেশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক কিছু সমস্যার কারণে তাঁরা দেশ ছেড়ে চলে যান। তিনি এক বছর ইন্দোনেশিয়ায় ছিলেন।
নাজমুল হাসান বলেন, প্রায় ২৫ মিটার লম্বা, সাত মিটার চওড়া ও ছয় মিটার উঁচু একটি নৌকায় করে তারা নিউজিল্যান্ড পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় ইন্দোনেশিয়ার দালালরা এই নৌকা চালাচ্ছিল। জাকার্তা থেকে সমুদ্রপথে রওনা দেওয়ার ১৮ দিন পর অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী তাঁদের আটক করে।
নাজমুল বলেন, ‘আমরা নৌকায় করে আন্তর্জাতিক পথ দিয়েই যাচ্ছিলাম। সে কারণে কোনো দেশ আমাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। চারদিন পর অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর জাহাজের একজন নাবিকের সঙ্গে আমাদের কথা হয় এবং পরে আমাদের অস্ট্রেলিয়ার একটি দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দ্বীপে যেতে আমাদের সময় লেগেছিল দুই দিন।’ পথে তাঁদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
নাজমুল জানান, নৌকায় দুই অন্তঃসত্ত্বা নারীও ছিলেন। দীর্ঘ যাত্রায় এ সময় অনেকেই অসুস্থ হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী দুই দিন পর কিছু খাবার, পানি ও সামান্য তেল দিয়ে ছোট ছোট দুটো নৌকায় তুলে দেয় ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে। ইন্দোনেশিয়ায় আসার পর পুলিশ নৌকাটির ক্যাপ্টেনকে আটক এবং বাকিদের উদ্ধার করে শরণার্থী ক্যাম্পে নিয়ে যায়।