সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের
সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিশীল ভূমিকা রেখে চলেছে বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০১৪ সালের 'কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরিজম'-এ বাংলাদেশ সম্পর্কে এ প্রশংসা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদ নিরসনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং দেশীয় ও বহুজাতিক সন্ত্রাসী দলগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সরকারের কঠিন অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠতে পারেনি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে বড় কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি। সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার কারণে বহুজাতিক সন্ত্রাসী দলগুলো বাংলাদেশের সীমানা ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডও চালাতে পারেনি। এ ছাড়া বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলেও এতে মন্তব্য করা হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এক অডিওবার্তায় আল-কায়েদার প্রধান আইমান আল জাওয়াহিরি ভারতীয় উপমহাদেশে সংগঠনটির নতুন ঘাঁটি হিসেবে বাংলাদেশের কথা বলেন। এ ছাড়া আইএসে বাংলাদেশিদের যোগ দেওয়ার চেষ্টা করার কারণে কয়েকজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এতে বলা হয়, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরাসরি সংশ্লিষ্ট না হয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, আইএসে জিহাদি নিয়োগের চেষ্টাকালে ২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সামিউন রহমান নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং সীমান্তরক্ষীরা সন্ত্রাসদমন আইন ২০০৯ (যা ২০১২ ও ১৩ সালে কিছু সংশোধন করা হয়) বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সন্ত্রাসনির্মূল বিষয়ে তথ্য বিনিময় এবং সহযোগিতারও প্রশংসা করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
প্রতিবেদনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আরো বলা হয়, জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজিবি) এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভবিষ্যতে নিজেদের স্থল, জল ও আকাশ সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ জোরদারে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা নিচ্ছে। সে লক্ষ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সন্ত্রাসবিরোধী প্রকল্পে অংশ নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ থেকেও বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছে বাংলাদেশ।