গবেষণা : কর্মজীবী মায়ের মেয়ের সাফল্য বেশি
যেসব মা চাকরি বা ব্যবসার খাতিরে ঘরের বাইরে সময় কাটান, তাঁরা প্রায় সব সময়ই আক্ষেপে ভোগেন। এই ভেবে যে, নিজের ক্যারিয়ার বা সংসারের প্রয়োজনের জন্য তাঁরা সন্তানকে যথাযথ সময় দিতে পারছেন না। তাঁরা ভাবেন, তাঁদের সন্তান হয়তো প্রয়োজনীয় যত্ন পাচ্ছে না। তাই সে হয়তো নিজের জীবনের জন্য উপযুক্ত কাজ করতে পারবে না।
অথচ শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে, কর্মজীবী মায়েদের মেয়েরা জীবনে তুলনামূলক বেশি সফল হয়। আর এসব মায়ের ছেলেসন্তানরা হয় অনেক যত্নশীল।
নিউইয়র্কভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম কোয়ার্টজ জানিয়েছে, গত ১৯ জুন হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে প্রকাশ হওয়া এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব মা শুধু গৃহকর্মে নিয়োজিত থাকেন, তাঁদের মেয়েসন্তানের চেয়ে কর্মজীবী মায়েদের মেয়েসন্তান নিজেরাও চাকরি করতে বা স্বনির্ভর হতে বেশি দেখা যায়। এমনকি কর্মজীবী মায়ের মেয়েরা অন্যদের চেয়ে বেশি উপার্জনও করে।
গবেষকরা কর্মজীবী মায়েদের ছেলেসন্তানের ওপরও মায়ের কাজের প্রভাব সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। তাঁরা বলছেন, যেসব মা ঘরে থাকেন, তাঁদের ছেলেদের চেয়ে কর্মজীবী মায়ের ছেলেরা সংসারের কাজে বেশি সাহায্য করে। একই সঙ্গে তারা পরিবারের সব সদস্যের প্রতি অনেক বেশি যত্নবানও হয়।
বিশ্বের দুই ডজন দেশ থেকে সংগ্রহ করা তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, ঘরে থাকা মায়েদের মেয়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি কর্মজীবী মায়ের মেয়েরা নিজেরাও কাজে নিযুক্ত হয়। এই মাত্রা খুব কম মনে হলেও পরিসংখ্যানের হিসাবে এই সংখ্যা প্রায় ৯৯ শতাংশ। এর অর্থ এই যে, এই ফলাফলের ব্যয় হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ১ শতাংশ।
হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ও এ-সংক্রান্ত গবেষণাটির প্রধান ক্যাথলিন ম্যাকগিন বলেন, ‘মায়েরা ঘরের বাইরে কাজে নিযুক্ত হলে সন্তানরাও স্বনির্ভর হবে—এ প্রভাবটুকু আমরা আশা করেছিলাম। কিন্তু আমরা এটা আশা করিনি যে, তাঁদের সন্তানরা যত্নশীলও হবে।’
গবেষণায় বলা হয়, কর্মজীবী মা তাঁর বাড়িতে সন্তানদের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে রাখেন। যার ফলে তাঁদের ছেলেমেয়েরা বুঝতে পারে যে কার কতটুকু দায়িত্ব।
আর এসব কারণে ম্যাকগিন শিশুদের ওপর দীর্ঘস্থায়ী ধনাত্মক প্রভাব বিস্তার করতে মায়েদের কর্মজীবী হতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি কাজে যান, তখন তা তার সন্তানদের এটা বুঝতে সাহায্য করে যে তাদের জন্য অসংখ্য সুযোগ খোলা আছে।’