স্বপ্ন দেখে জিতল তুষার, হারল ক্যানসার
স্বপ্নকে সত্যি করার অদম্য চেষ্টার সামনে দাঁড়াতে পারে না কোনো বাধা। ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাঁচি শহরের তরুণ তুষার রিশির গল্প প্রমাণ করল সেটাই। দুরারোগ্য ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে এই তরুণ ২০১৭ সালের দ্বাদশ শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষায় শতকরা ৯০ ভাগের বেশি নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ভালো ফলের স্বপ্নকে বাস্তবে এনেছেন তুষার। গত রোববার ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।
তিন মাস পরপর শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার জন্য দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে (এআইআইএমএস) ছুটতে হয় তুষারকে। তারপরও কোনো রকমের কোচিং ছাড়াই ইংরেজিতে ৯৫, পদার্থবিদ্যায় ৯৫, গণিতে ৯৩, কম্পিউটারে ৮৯ ও চারুকলায় ১০০ নম্বর তুলেছেন তুষার।
‘নিয়মিত অধ্যয়ন পড়ালেখার চাপ অনেকটা কমিয়ে দেয়’ এই নীতিতে বিশ্বাসী তুষার বলেন, ‘চিকিৎসা নেওয়ার পর আমি এখন বেশ ভালোই আছি।’
দিল্লি সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ১৯ বছর বয়সী এ তরুণের জন্য যাত্রাটা খুব সহজ ছিল না। ২০১৪ সালে প্রথম তাঁর বাম হাঁটুতে ক্যানসার ধরা পড়ে। ফলে সে বছর দশম শ্রেণির পরীক্ষায় বসতে পারেননি তিনি।
তুষার বলেন, ‘২০১০ সালের দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষার পর ক্যানসার ধরা পড়ে। আমাকে ১১ মাস ধরে কেমোথেরাপি নিতে হয়। এটা আমার জীবনে আমূল পরিবর্তন আনে। এরপরও আমি পড়ালেখায় মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করি।’
কেমোথেরাপির পর ২০১৫ সালের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ভালো নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হন তুষার। তবে অন্য সব বিজ্ঞান পড়ুয়ার মতো ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চান না তিনি বরং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি অথবা অর্থনীতিতে স্নাতক করতে চান।
তুষারের মা ঋতু বলেন, ‘সে শুধু স্কুলের বই থেকেই পড়াশোনা করেছে। কখনো কোচিংয়ে যায়নি। আমি তার সাফল্যে বেশ উচ্ছ্বসিত। চোখের সামনে ক্যানসারের সঙ্গে তাকে যুদ্ধ করতে দেখেছি। আমি জানি তার জন্য এটা কতটা কঠিন ছিল। আশা করি এরপর সে সুস্থ থাকবে। সব লক্ষ্য অর্জনে সাফল্য পাবে।’
এদিকে ‘দ্য পেশেন্ট পেশেন্ট’ নামে একটি বইও লিখেছেন তুষার। এই বইতে ক্যানসারের সঙ্গে তাঁর সংগ্রামের গল্প বলেছেন তুষার। অনলাইনে কেনাবেচার ওয়েবসাইট অ্যামাজনে বইটির কাটতি নাকি বেশ ভালোই।