কেমন আছেন দুবাইয়ের গৃহকর্মী কামরুন্নেসা
সংযুক্ত আরব আমিরাতে গৃহকর্মীর কাজ করেন ভারতের কামরুন্নেসা বেগম (৩৮)। বিভিন্ন গণমাধ্যমে যখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ করা নারীদের দুরবস্থার কথা উঠে আসছে। ঠিক তখন তিনি শোনালেন ভিন্ন কথা। তিনি জানালেন সেখানে তিনি বেশ ভালোই আছেন। তিনি খুব ভাগ্যবান। তিনি যে পরিবারে অধীনে কাজ করেন তারা তাঁর বেশ যত্ন নেয়।
কামরুন্নেসাও প্রথমে সবার মতো গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পড়ে ভয় পেয়েছিলেন। তিনি দুবাইয়ের একটি জৈন পরিবারে তিন বছর ধরে কাজ করছেন। ওই পরিবারে বীথিকা জৈন, তার স্বামী ও দুই সন্তান থাকে।
কামরুন্নেসা বলেন, ‘সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে উঠে বাচ্চাদের জন্য নাস্তা তৈরি করি। এরপর তাদের দুপুরের খাবার বক্স প্রস্তুত করে দেই। এরপর আমি তাদের বাবা-মার জন্য খাবার তৈরি করি। তারা বাসা থেকে বের হয়ে গেলে আমি ঘর পরিষ্কার করি। ১২টার পর আমি একদম ফ্রি হয়ে যাই। এরপর আমি বিশ্রাম করতে পারি।’ এরপর বাচ্চারা আড়াইটা অথবা সাড়ে ৩টায় বাসায় ফিরে আসে। কামরুন্নেসা তাদের নাস্তা তৈরি করেন, তাদের সঙ্গে সময় কাটান। তিনি বলেন, ‘যদি তাদের ক্ষুধা লাগে, আমি তাদের নাস্তা দেই। তাদের লাঞ্চবক্স সরিয়ে রাখি। এরপর আমি আবার ফ্রি। ডিনারের জন্য অপেক্ষা করি।’
জৈন পরিবারটি রাত ৮টার মধ্যেই তাদের রাতের খাবার খায়। এরপর কামরুন্নেসা ঘুমিয়ে যান। শুক্রবার তাঁর ছুটি।
বীথিকা জৈন জানান, তাঁরা কামরুন্নেসাকে খাবার, প্রসাধন, বাসস্থান, চিকিৎসা খরচ এমনকি বার্ষিক ছুটিতে বাড়িতে পরিবারের কাছে যাওয়ার জন্য বিমানের টিকেটও দেন। তিনি বলেন, ‘এপ্রিল মাসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করি, চিকিৎসা খরচ দিয়েছি। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে আসার পর আমরা তাকে দুই সপ্তাহের বিশ্রামও দিয়েছি। তিনি ভারতে যাওয়ার জন্য তিনি বছরে এক মাস ছুটি পান। তিনি আমাদের সঙ্গে ভালোই আছেন।’
বীথিকা আরো বলেন, ‘তিনি আমাদের সঙ্গে অনেকদিন ধরে আছেন। আমরা তাকে আরো অনেকদিন রাখতে চাই।’
কামরন্নেসা বলেন, ‘এ দেশে কাজ করার জন্য আমি আমার পরিবার ছেড়ে এসেছি। আমার তাদের কথা মনে পড়ে। কিন্তু এখানে কাজ করতেও আমার ভালো লাগে। এরা আমার আপন মানুষের মতো হয়ে গেছে। আমি এই বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটতে ভালোবাসি। আমি চাই সব গৃহপরিচারিকা এমন ভালো কর্তা পাক।’