ছিটমহল নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে : দীপ্তিমান সেনগুপ্ত
ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির সহসম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত অভিযোগ করেছেন, ছিটমহল নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। ছিটমহলকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণির রাজনীতিকরা প্রচার পেতে চাইছেন। আবার ছিটমহলকে আঁকড়ে ধরে অনেক রাজনৈতিক দলই পায়ের তলার জমি শক্ত করতে চাইছে।
আজ বুধবার এ অভিযোগ করেন দীপ্তিমান সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ছিটমহলে কোনোদিন পা না রেখেই এখন ছিটমহলবাসীর চিন্তায় রাতের ঘুম নষ্ট করছেন অনেকেই। যাঁদের কাছে একজন ছিটমহলবাসীর ফোন নম্বর নেই, আজ তারাই ছিটমহলের সমস্যা নিয়ে কত কী ভাবছেন! এটা দুর্ভাগ্যের।
মঙ্গলবার ছিটমহলে জনগণনার সময়সীমা বাড়ানোর জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বিদেশ) সুষমা স্বরাজের কাছে আবেদন করেন ভারতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্রবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছিটমহলে মাথাগোনার কাজ চালিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, বাংলাদেশে ভূখণ্ডে থাকা ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দাদের ওপর নানা ধরনের হেনস্তার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন প্রদীপ।
তবে হেনস্তার এই অভিযোগের বিষয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে দীপ্তিমান বলেন, ‘প্রদীপ ভট্টাচার্যের ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। উনি স্রেফ মনগড়া অভিযোগ তুলেছেন।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশে থাকা ১১১টি ছিটমহলের অনেকেই ভারতে আসতে চান। কিন্তু মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত যা জানতে পেরেছি তাতে ওখানে অনেক বাসিন্দাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। আমাকে ওখানকার অনেক বাসিন্দা ফোনও করেছেন।’
প্রদীপ ভট্টাচার্য আরো বলেন, ‘আমি বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছি। একই সঙ্গে আবেদন জানিয়েছি, ছিটমহলে মাথাগোনার কাজ যাতে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সঙ্গে ভারতের কোচবিহার জেলা এবং কোচবিহারসংলগ্ন বাংলাদেশের জেলাশাসকদের মধ্যে একটি কার্যকরী কমিটি তৈরির দাবিও জানিয়েছি।’ তিনি বলেন, সুষমা স্বরাজ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
আজ কলকাতার দৈনিকে বর্তমান এই খবর প্রকাশ পাওয়ার পর দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, ‘ছিটমহলে গত ১৪ জুলাই মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ মাথা গোনার কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। আজ বুধবার দিন শেষে এই হার প্রায় ১০০ শতাংশের কাছাকাছি চলে যাবে। তাহলে সময়সীমা বাড়ানোর প্রয়োজন কী?’ তিনি বলেন, ‘প্রদীপ ভট্টাচার্য ছিটমহলে না এসেই এই ধরনের অভিযোগ তুলছেন। এরই মধ্যে দুই দেশের আধিকারিকরা সরেজমিনে এসে বিভিন্ন ছিটমহলে ঘুরে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখছেন। এর আগেও প্রদীপ ভট্টাচার্য এই ধরনের অভিযোগ তুলেছিলেন যা দুই দেশের আধিকারিকরা ঘুরে দেখার পর মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। আসলে ছিটমহলকে সম্বল করে রাজনীতিকরা আজ প্রচারের আলো পেতে চাইছেন।’
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দাদের হেনস্তা প্রসঙ্গে দীপ্তিমান সেনগুপ্ত জোরের সঙ্গে বলেন, ‘এটা রমজানের মাস। আমি নিজে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভারতীয় বিভিন্ন ছিটে গিয়েছি। দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, সেখানে পূর্ণ শান্তি রয়েছে। হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষ এখন ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা। ওখানে কোনো হেনস্তা বা অশান্তির কিছুই ঘটেনি। ফালতু এই ধরনের অভিযোগ তোলা মানে দুই দেশের সম্পর্কের মাঝে চিড় ধরানোর চেষ্টা।’