বিড়ালের খুনি ধরতে গলদঘর্ম কলকাতার পুলিশ
একটি বিড়ালের খুনিকে ধরতে তৎপর হয়েছে কলকাতা পুলিশ। যেভাবেই হোক না কেন, বিড়ালের খুনিকে তারা পাকড়াও করবেই। এজন্য কার্যত দিনরাত এক করে শহর চষে বেড়াচ্ছেন কলকাতা পুলিশের দুঁদে গোয়েন্দারা।
কয়েকদিন আগে কলকাতার বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি উপনগরীর বাসিন্দা সৈকত সরকারের (৩২) বাড়ির পাশ থেকে পচা গন্ধ আসে। গন্ধের উৎস সন্ধানে নেমে পড়েন তিনি। পরে দেখতে পান, রাতের অন্ধকারে বাড়ির পাশেই কেউ একজন মৃত বিড়াল ফেলে গেছে। মরা বিড়াল পচে গন্ধ ছড়াচ্ছে। সৈকত সরকার এলাকায় পশুপ্রেমী বলে পরিচিত। পশুপাখি নিয়ে কাজ করে এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংঘঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত। বিড়ালের এমন বেঘোরে প্রাণ যাওয়া তিনি মানবিক দিক থেকে কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। খুন সন্দেহ করে তিনি সোজা স্থানীয় পাটুলি থানায় চলে যান। পুলিশের কাছে বিড়াল খুনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। দাগি অপরাধীদের পাশাপাশি পুলিশ এখন বিড়ালের খুনির সন্ধানে নেমেছে।
শনিবার সকাল থেকেই পুলিশের সদস্যরা বিড়ালের খুনির খোঁজ করছেন। পুলিশের দুঁদে গোয়েন্দারাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তবে কীভাবে ওই বিড়ালটির মৃত্যু হয়েছে এ বিষয়ে পুলিশ এখনো পরিষ্কার নয়। মৃতদেহটি পচাগলা অবস্থায় উদ্ধার হওয়ায়, এর শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন কি না তা বোঝা যায়নি। ময়নাতদন্ত ছাড়া বিড়ালের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের কোনো উপায় নেই পুলিশের কাছে।
সরকারি ছুটি হওয়ায় পুলিশের সমস্যা আরো বেড়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বেলগাছিয়া প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিড়ালটির ময়নাতদন্ত হবে।
কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসএসডি) সন্তোষ পাণ্ডে বলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২৯ ধারা এবং ১৯৬০ সালের পশু নির্যাতনবিরোধী আইনে অজ্ঞাতপরিচয় খুনির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ মহলের একাংশের ধারণা, এমনিতেই কলকাতা শহরে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। তার ওপর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো বিড়াল-কুকুরের খুনি পাকড়াও করতে যদি উর্দি পরে ময়দানে নামতে হয়, তাহলে আর কথাই নেই। কিন্তু কী আর করা। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশ। অগত্যা উর্দি পরেই বিড়ালছানার খুনিকে পাকড়াও করতে ছোটা।