জাতিসংঘের বৈঠকে যাচ্ছেন না সু চি
জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ সভায় যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতা ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি।
গতকাল মঙ্গলবার সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ‘গণহত্যা’-সংক্রান্ত খবরে সারা বিশ্ব যখন শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ও সমালোচনামুখর, ঠিক তখনই মিয়ানমার এ সিদ্ধান্তের কথা জানাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি আগামী ২০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সভায় যোগ দেবেন না। মিয়ানমারে আর যাতে সহিংসতা না হয়, সে বিষয়ে জাতিসংঘের সভা থেকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এনএলডির মুখপাত্র অং শিন বলেন, ‘চলমান সমস্যা কিংবা সমালোচনার মুখোমুখি হতে সু চি ভীত নন; বরং তিনি দেশে থেকে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।’
আজ বুধবার চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, অং সান সু চির পরিবর্তে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় যোগ দেবেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট উ হেনরি ভান থিও।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে রোহিঙ্গাদের হত্যা-উচ্ছেদসহ চলমান সহিংসতায় পাহাড়সম সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন দেশটির নেত্রী অং সান সু চি। দেশটির ওপর দিন দিন আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে।
গত ২৫ আগস্টের পর রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা শুরু হলে এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।
আলজাজিরার খবরে আরো বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও উচ্ছেদে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই অভিযোগ অস্বীকার করছে মিয়ানমার সরকার। সরকার বলছে, এসব করছে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা। এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে মিয়ানমার বলছে, রাখাইনের প্রায় ৩০ হাজার স্থানীয় বৌদ্ধ বিদ্রোহীদের সহিংসতার শিকার হয়ে বাড়িঘর ছেড়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সব রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মিয়ানমারকে ফেরত নিতে হবে। রোহিঙ্গারা যাতে আর মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার না হয়, সে জন্য মিয়ানমারে তাদের জন্য নিরাপত্তা এলাকা গড়ে তোলার আহ্বানও জানানো হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।
রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দিতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও।