‘হ্যালো, আমি মেডিসিন বাবা’
ডাকপিয়ন কিংবা পেশাদার অ্যাথলেট নন, এরপরও রোজ হাঁটেন সাত কিলোমিটারের বেশি। উদ্দেশ্য দ্বারে দ্বারে গিয়ে অব্যবহৃত ওষুধ সংগ্রহ করা। সেই ওষুধে প্রাণে বাঁচে অর্থকষ্টে ভোগা শত শত ভারতীয়।
দিল্লির পথে-প্রান্তর চষে বেড়ানো সেই লোকটির নাম ওমকার নাথ। বয়স ৭৯। ওষুধ সংগ্রহ করাকেই অঘোষিত পেশা বানিয়েছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, ‘হ্যালো, আমি মেডিসিন বাবা’লেখা গেরুয়া পোশাক পরে রোজই ঘুরে বেড়ান ওমকার নাথ। আর এহেন কাজের ফল মেলে সপ্তাহ শেষে। লাখ টাকার ওষুধ জোগাড় করেন। আর সেগুলো বিনামূল্যে সরবরাহ করেন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়া গরিব লোকজনকে।
একটি রক্তদানকেন্দ্রে টেকনিশিয়ান ছিলেন ওমকার নাথ। কাজ করতে গিয়ে দেখেছেন চিকিৎসার জন্য গরিব মানুষের আহাজারি। বিনা চিকিৎসায় শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন। সে তাগিদ থেকেই বড়লোকের বাড়িতে ওষুধ কুড়াতে যান। ঝুলিভরা সেসব ওষুধ নিয়ে জমান পশ্চিম দিল্লির মঙ্গলাপুরীতে ভাড়া করা একটি ঘরে। সেখান থেকে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী, বিভিন্ন রোগের ওষুধ বিলি করেন।
সংগৃহীত ওষুধ শুধু নিজেই বিলি করেন না; ভারতে গণস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনকেও দেন ওমকার নাথ। এমনকি কিছু কিছু চিকিৎসককেও তিনি ওষুধ বিলি করেন রোগীদের সরবরাহের জন্য। তেমনই এক চিকিৎসক লালিমা রঙ্গওয়ানি।
ওমকার নাথ সম্বন্ধে এ চিকিৎসক জানান, শুরুতে তাঁকে বিশ্বাস করা কঠিন ছিল। তবে ব্যাচ নম্বরসহ অন্যান্য বিষয় দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে তাঁর দেওয়া ওষুধ সঠিক।
সাদামাটা জীবনযাপন করেন ওমকার নাথ। প্রতি মাসে বিভিন্ন লোকজন ৩২ হাজার রুপি অর্থসাহায্য করেন তাঁকে। এ দিয়ে সার্বিক খরচ চালান তিনি।
ওমকার নাথ স্বপ্ন দেখেন, সারা দেশে ওষুধ ব্যাংক করবেন, যাতে করে বিনামূল্যে ওষুধ পেতে পারেন গরিব লোকজন। নিজের স্বপ্ন নিয়ে তাঁর সরল স্বীকারোক্তি, ‘সমস্যার সাগরে আমার চেষ্টা এক বিন্দু সমাধান মাত্র।’
‘আমি আশা করি, মৃত্যুর আগে এটা (ওষুধ বিতরণ) বড় আন্দোলনে রূপ নেবে এবং আমি কিছু হলেও এতে অবদান রাখব।’