রোহিঙ্গা সংকট অগ্রণযোগ্য ট্র্যাজেডি : যুক্তরাজ্য
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকটকে ‘অগ্রহণযোগ্য ট্র্যাজেডি’ আখ্যা দিয়ে দেশটির কার্যত নেতা অং সান সু চির সরকারকে দ্রুত সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। একই সঙ্গে রাখাইনে সংঘাতপীড়িত এলাকায় মানবিক সাহায্য পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
মিয়ানমারে অং সান সু চির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও রাখাইন রাজ্য সফর করে আজ বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের এশিয়াবিষয়ক মন্ত্রী মার্ক ফিল্ড এই মন্তব্য করেন।
‘গত কয়েক সপ্তাহে রাখাইনে আমরা যা দেখেছি, তা পুরোদস্তুর ও অগ্রণযোগ্য ট্র্যাজেডি’, বলেন মার্ক ফিল্ড।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তা পরিষদে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজের। এর আগেই তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম সহিংসতা চালানোয় মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে চিঠি দিয়েছেন।
মিয়ানমারের সহিংসতার বিষয়ে মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েক বছরে মিয়ানমারের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান এই সহিংসতা এবং এর ফলে সৃষ্ট মানবিক সংকট সেই অগ্রগতির পথ থেকে দেশটিকে সরিয়ে নিচ্ছে।’
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতে মিয়ানমার যে সহিংসতা চালাচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে সেখানে বৌদ্ধ ছাড়াও যেসব জাতিগোষ্ঠী রয়েছে, তাদেরও নিরাপত্তা দিতে হবে। আর রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো সহিংসতার দায় অবশ্যই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে নিতে হবে।’
এর আগে গত বুধবার রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা প্রবণ এলাকা থেকে প্রতিবেদন করা কয়েকজন প্রতিবেদক যান যুক্তরাজ্যে। তাঁদের সঙ্গে কথা হয় যুক্তরাজ্যের কর্তাব্যক্তিদের।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা গত কয়েক দশক ধরেই সহিংসতার শিকার হয়ে আসছে। গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ করে। এরে জেরে রোহিঙ্গাদের ওপর আবার সহিংসতা শুরু হয়।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য মতে, নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় চার লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। বর্তমানেও পালিয়ে আসছে অনেক রোহিঙ্গা। তারা খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ নানামুখী সংকটের মধ্যে রয়েছে।