মিয়ানমারের ওপর নিরাপত্তা পরিষদের চাপ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং আন্তঃসম্প্রদায় সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সোমবার জাতিসংঘের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
একই সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের চলমান পরিস্থিতি বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে একটি প্রেসিডেনশিয়াল বিবৃতি দিয়েছে পরিষদের সদস্য দেশগুলো। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষদের ফিরিয়ে আনা এবং মানবিক সাহায্য পাঠানোর সুযোগ নিশ্চিত করতে গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানায় তারা।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের দাপ্তরিক বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ও ইতালির স্থায়ী প্রতিনিধি সেবাস্তিয়ানো কার্দি বিবৃতিটি পড়ে শোনান।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ামনারের রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। ওই ঘটনায় ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রাণরক্ষার্থে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদ ‘মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের’ দ্বারা রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর ও সম্পত্তিতে অগ্নিসংযোগের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করছে।
এ ছাড়া বিবৃতিতে রাখাইন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর আবার অতিরিক্ত বল প্রয়োগ না করা এবং সেখানে বেসামরিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে ব্রিটেন ও ফ্রান্স গত মাসে যে খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছিল তার অধিকাংশই রাখা রয়েছে। তবে মিয়ানমারের সাবেক জান্তা সরকারের সমর্থক চীন ওই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে। কূটনীতিকরা জানান, প্রস্তাবটি ঠেকাতে চীন তার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের ইঙ্গিত দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত বেইজিং সমঝোতার মাধ্যমে বিবৃতিতে সম্মতি দেয়।
গত ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের কারণে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ মিয়ানমারের এই দমনপীড়নকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।